বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
রেহেনা বিবির সঙ্গে খাজা মইনউদ্দীন চিশতির সাত বছর আগে বিয়ে হয়। খাজা অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের ছেলে। তাদের একটি পাঁচ বছরের পুত্র সন্তান রয়েছে। আট মাস আগে আবার সিতায়ের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাকে খাজা বিয়ে করেন। এরপর থেকে পরিবারে চরম কোন্দল শুরু হয়। খাজা দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে পৃথক থাকতে শুরু করেন। পারিবারিক গণ্ডগোলের জন্য রেহেনাও বাপের বাড়ি চলে যান। খাজা সহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের মামলা দায়ের করে। ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে তারা বাড়ি বিক্রি করার পরিকল্পনা করেন। স্থানীয় এক ব্যবসায়ীকে তার বাড়িটি বিক্রি করে দেয়। বাড়ি বিক্রির খবর পেয়ে সালিশি ডাকে রেহেনা। স্থানীয় মানুষের সমর্থন পেয়ে সে বাড়ির তালা ভেঙ্গে পুত্রকে নিয়ে থাকতে শুরু করে। একা মহিলার থাকা সম্ভব নয় বলে মা ও দাদাকেও ওই বাড়িতে নিয়ে আসে। সম্প্রতি রেহেনার মা মারা যান। পরিবার সহ ওই বাড়িতে ছিলেন রেহেনা। বাড়ি কেনার পরেও দখল না পেয়ে খাজার উপর চাপ বাড়ায় ওই ব্যবসায়ী। প্রায়শই রেহেনাকে বাড়ি ছাড়ার জন্য চাপ দিতে থাকে খাজা। সে মাঝে মধ্যেই তার পুত্রকে ফিরে পাওয়ার জন্য রেহেনার উপর দীর্ঘদিন ধরে চাপ দিচ্ছিল বলে অভিযোগ। কোনও চাপের কাছেই মাথা নত করছিল না রেহেনা। বাধ্য হয়ে ওই রাতে ফিল্মি কায়দায় আক্রমণ করা হয় রেহেনাদের বাড়ির উপর। রাত ১টা নাগাদ একদল সঙ্গী এসে ওকড়াবাড়ির দুঃখভোলারকুঠি গ্রামে রেহেনার বাড়ি ঘিরে ফেলে খাজার সঙ্গীসাথীরা। চারিদিকে তীর ধনুক নিয়ে ঘিরে দরজা ভেঙ্গে বাড়ির ভিতরে ঢোকে তারা। ঘরে ঢুকেই খাজার শ্বশুরকে আক্রমণ করে। বাবাকে বাঁচাতে এলে তাঁর পুত্র নাজিমুল হককে চাকু দিয়ে আক্রমণ করা হয়। এরপর অন্য ঘরে ঢুকে রেহেনা ও তার পুত্রকে নিয়ে চম্পট দেয় তারা। রেহেনাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় বাধা দিতে এলে তারা মামা কাইয়ুম শেখ ও মামী মলিনা বিবিকেও আক্রমণ করা হয়। তারা যেন চিৎকার চেঁচামেচি না করে তারজন্য তাদের মাথায় বন্দুকও ঠেকানো হয় বলে অভিযোগ। ওরা চলে যাওয়ার পরে চিৎকার শুনে পাড়াপ্রতিবেশীরা এলে পুলিসকে খবর দেওয়া হয়। সারাদিন পেরিয়ে গেলেও মেয়ে ও নাতিকে খুঁজে না পেয়ে চিন্তিত রেহেনার পরিবার। স্থানীয় বাসিন্দারাও ক্ষোভ প্রকাশ করে পুলিসের ভূমিকা নিয়ে। চাকুরিজীবী মেয়েকে বিয়ে করার পরেই রেহেনার উপর অত্যাচার বাড়ায় খাজা বলে অভিযোগ। বাড়ি বিক্রি হয়ে গেলে রেহেনার কিছু থাকবে না। ছেলেকে নিয়ে অথৈই জলে পড়বে। গ্রামবাসীরা তাই সালিশিতে রেহেনার পাশে দাঁড়ায়। গ্রামবাসীর ভরসায় নতুন করে ওই বাড়িতে থাকতে শুরু করে। কিন্তু সোমবার আচমকা আক্রমণ করে অপহরণ করে নিয়ে যায় খাজার দলবল। খবর পেয়ে দ্রুত পুলিস এলেও রেহেনাকে উদ্ধার করতে পারেনি। ছেলেকে নিয়ে কি অবস্থায় রয়েছে রেহেনা তা নিয়ে ঘোর দুশ্চিন্তায় রয়েছে তারা।