বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
কলেজ চত্বরের প্রায় ২০০ মিটার রাস্তায় পা রাখলেই চোখে পড়বে মন ভালো করে দেওয়া এই রঙ্গলির সমাহার। ছাত্রছাত্রীরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একটু একটু করে নিখুঁত দক্ষতায় সাজিয়ে দিচ্ছেন কলেজের কালো পিচ রোড। অধ্যক্ষ এবং শিক্ষক শিক্ষিকাদের কক্ষগুলির প্রবেশ পথগুলিকেও রঙিন করে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
২০ জনের এই টিম রঙ্গলিতে রয়েছে মালদহ কলেজের বিভিন্ন বিভাগের ১৮ জন ছাত্র এবং দুই জন ছাত্রী। তবে সহপাঠনীদের বেশি সময় দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বাস্তব অসুবিধা বুঝেই নিজেদের কাঁধে অতিরিক্ত দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন কলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আর্য খান্না, বিকম প্রথম বর্ষের সিদ্ধার্থ সাহা, বিসিএ পাঠরত সৌভিক কুণ্ডু, সুমন দাসরা।
পড়াশুনার বাইরে ব্যক্তিগতভাবে অঙ্কন শিক্ষক হিসাবে স্বয়ম্ভর আর্য খান্না বলেন, কীভাবে মালদহ কলেজের প্ল্যাটিনাম জয়ন্তীকে আরও বর্ণময় করে তোলা যায় তা নিয়ে অনেকদিন থেকেই চিন্তাভাবনা করছিলাম। আমাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনাতেই উঠে আসে রঙ্গলি দিয়ে কলেজকে রঙিন করে তোলার প্রস্তাব। আর দেরি করিনি আমরা। কলেজ অধ্যক্ষকে এই ভাবনা জানাতেই তিনি আমাদের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছেন।
আঁকিয়েরা জানিয়েছেন, রঙ্গলিতে ব্যবহার করা হচ্ছে নামকরা ব্র্যান্ডের প্লাস্টিক পেইন্ট। প্লাস্টিক পেইন্ট ব্যবহারের কারণ রঙ্গলি দীর্ঘস্থায়ী করা। সৌভিক বলেন, এই রঙ্গলির মাধ্যমে আমরা মালদহ কলেজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে শুভ এবং সৃষ্টিশীল চেতনার বার্তা দিতে চেয়েছি। গত পাঁচ দিন দিন ধরে আঁকা হচ্ছে রঙ্গলি। প্ল্যাটিনাম জয়ন্তীর শোভাযাত্রা শুরু হওয়ার আগেই শেষ হবে রঙ্গলি দিয়ে কলেজের মূল রাস্তাগুলিকে রঙিন করে তোলার কাজ।
মালদহ কলেজের প্রশাসক তথা জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ছাত্র ছাত্রীদের রঙ্গলি দিয়ে কলেজের পথগুলিকে সাজিয়ে তোলার এই পরিকল্পনা আমাকে মুগ্ধ করেছে। প্ল্যাটিনাম জয়ন্তীর এই অনুষ্ঠান কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে পড়ুয়া সকলেরই। সবাই এইরকম বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করলে মালদহ কলেজের এই স্মরণীয় মুহূর্ত প্রকৃত অর্থেই বর্ণময় হয়ে উঠবে।
অধ্যক্ষ মানস বৈদ্য বলেন, রঙ্গলির এই পরিকল্পনা ছাত্র ছাত্রীদেরই মস্তিষ্কপ্রসূত। যা করার ওরাই করেছে। আমরা শুধু ওদের পাশে রয়েছি। এমন কৃতী ছাত্র ছাত্রীরা প্ল্যাটিনাম জয়ন্তী অনুষ্ঠানকে সার্থক করতে এগিয়ে আসায় শিক্ষক হিসাবে গর্ব হচ্ছে।
অবশ্য শুধু রঙ্গলি নয়। ১০ জানুয়ারি প্ল্যাটিনাম জয়ন্তী পালনের শুরুর দিনেই আরও বেশ কিছু অভিনব পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে মালদহ কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে। প্ল্যাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক পীযূষ সাহা বলেন, মালদহ কলেজের প্রাক্তনীদের আরও বেশি করে এই স্মরণীয় মুহূর্তের সঙ্গে যুক্ত করার লক্ষ্যে কলেজের প্রতিটি বিভাগ পৃথক পৃথকভাবে পুনর্মিলনের আয়োজন করেছে। প্রাক্তনীদের সাড়াও মিলছে ভালোই। মালদহ কলেজ অ্যালুমনি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ বাগচি বলেন, ১০ জানুয়ারি সকাল ৮টায় মালদহ কলেজের মাঠ থেকে শুরু হবে বর্ণাঢ্য প্রভাতফেরি। থাকবে ৭৫টি রঙিন পতাকা। বাজানো হবে ৭৫টি শঙ্খ। মালদহ কলেজ যে আদিবাসী গ্রামটিকে অধিগ্রহণ করেছে সেই খেড়িবাড়ির আদিবাসী নাগরিকরা নৃত্যশৈলী পরিবেশন করবেন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করা মালদহ কলেজের স্নাতক স্তরের ছাত্রছাত্রীরা প্রাসঙ্গিক মডেল এবং বিষয়কে তুলে ধরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার পরিকল্পনা করেছেন।