প্রেম-প্রণয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকবে। কারও কথায় মর্মাহত হতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত হওয়া যেতে পারে। কর্মে সুনাম ... বিশদ
লনবাবু বলেন, হোমগার্ডে চাকরির জন্য আমিও তৃণমূল কংগ্রেসের আলিপুরদুয়ারের জেলা সভাপতি মোহন শর্মার কাছে আবেদনপত্র দিয়েছিলাম। অন্যদের চাকরি হলেও আমার চাকরি হয়নি। তবুও হাল ছাড়ছি না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর আস্থা আছে। হোমগার্ডে নিয়োগের জন্য ফের আবেদন করব।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোহনবাবু বলেন, লালনবাবু স্বাস্থ্যদপ্তরের অ্যাম্বুলেন্স চালান। তিনি আবেদন করেছিলেন। ওঁর বিষয়টি নিয়ে আমি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।
লালনবাবু বলেন, বাম সরকারের আমলে প্রাক্তন কেএলও এবং লিঙ্কম্যানদের পুনর্বাসন, কর্মসংস্থানের বিষয়টি উপেক্ষিত ছিল। ভালো লাগছে এই সরকারের আমলে প্রাক্তন কেএলও’রা হোমগার্ডে চাকরি পাচ্ছে। আবার লিঙ্কম্যানদের স্বনির্ভরতার জন্যও উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, রাজবংশী সম্প্রদায়ের বর্তমান প্রজন্ম ভাওয়াইয়ার পাশাপাশি তাদের নিজেদের কৃষ্টি ভুলতে বসেছে। তাই রাজবংশী সম্প্রদায়ের বর্তমান প্রজন্মের কাছে ভাওয়াইয়া গানকে বাঁচাতে প্রয়াস নিয়েছি।
কেএলও’র তৃতীয় ব্যাচের সদস্য ছিলেন লালন দাস। সংগঠনে তার নাম ছিল ভুটিয়া। ভুটানের কালিখোলা জঙ্গলে কেএলও’র শিবিরে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। ২০০০ সালে ধরা পড়েন। চারবছর জেল খাটার পর ছাড়া পান। বাম সরকারের প্রতিশ্রুতির পরেও আত্মসমর্পণকারী অন্য জঙ্গিদের মতো লালনবাবুরও কোনও স্থায়ী কর্মসংস্থান হয়নি। ২০০৬ সাল থেকে সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে তিনি স্বাস্থ্যদপ্তরের অ্যাম্বুলেন্স চালাচ্ছেন। হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির ফান্ড থেকে তাঁকে বেতন দেওয়া হয়।
অ্যাম্বুলেন্স চালানোর পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সম্প্রদায়ের বর্তমান প্রজন্মকে ভাওয়াইয়া সঙ্গীতমুখী করতে কুমারগ্রাম থানার পাশে তিনি স্কুল খুলেছেন। তাঁর স্কুলকে উত্তরবঙ্গ ভাওয়াইয়া সঙ্গীত পর্ষদ অনুমোদনও দিয়েছে। লালনবাবু তাঁর রায়ডাক-সংকোশ ভাওয়াইয়া সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ে প্রতি রবিবার করে বিনামূল্যে গান শেখান। বর্তমানে তাঁর গানের স্কুলে ৫০ জন তালিম নিচ্ছেন। শুধু ভাওয়াইয়া সঙ্গীতই নয়, রাজবংশী সম্প্রদায়ের লুপ্তপ্রায় চোরচুর্নি, বিষহরা, কুষাণ গানেরও তালিম দেন তিনি।
কুমারগ্রাম থানার পেছনে লালনবাবুর বাড়ি। মা, বাবা, স্ত্রী ও ছ’বছরের মেয়েকে নিয়ে তাঁর সংসার। বাড়িতে তিনিই একমাত্র উপার্জন করেন। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে মাসে ৮৫০০ টাকায় তাঁর সংসার চালানো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।