রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
গতকাল নিউ ইয়র্কের কাছে চউটাউকা ইনস্টিটিউশনে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য শুরু করার ঠিক আগে মঞ্চে উঠে রুশদির উপর হামলা চালায় মাতার। ছুরিকাহত হন বিখ্যাত এই সাহিত্যিক। ছুরির ১০-১৫ বার আঘাতে ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরতে শুরু করে। সেই সময় দর্শকাসনে প্রায় আড়াই হাজার মানুষ। হামলাকারী মাতারকে গ্রেপ্তার করা হয়। দর্শকাসনে থাকা এক ডাক্তার রুশদির প্রাথমিক চিকিৎসা করেন। এরপর তাঁকে আকাশপথে উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে দ্রুত অস্ত্রোপচার হয় ৭৫ বছর বয়সি লেখকের। গতকালের অনুষ্ঠানে রুশদির সাক্ষাৎকার নেওয়ার কথা ছিল হেনরি রিসের। আচমকা এই হামলার জেরে জখম হয়েছেন তিনিও। রিসের মাথায় আঘাত লেগেছে। হামলার পর চউটাউকা ইনস্টিটিউশনের তরফে বিবৃতি প্রকাশ করে ঘটনার নিন্দা করা হয়। বলা হয়, ‘আজ আমাদের সাক্ষী হতে হল বিদ্বেষের হিংস্র বহিঃপ্রকাশের। এই ঘটনা আমাদের অন্তরকে কাঁপিয়ে দিয়েছে।’
রুশদি ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। তবে, গত দু’দশকের বেশি তিনি আমেরিকায় থাকেন। ১৯৮৮ সালে লেখা ‘স্যাটানিক ভার্সেস’-এর জন্য তাঁর প্রাণনাশের ফতোয়া জারি করেছিল কট্টরপন্থীরা। কিছু মৌলবীর অভিযোগ ছিল, পয়গম্বর মহম্মদের অসম্মান করেছেন রুশদি। বিখ্যাত এই সাহিত্যিককে খুনের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন ইরানের নেতা আয়াতোল্লা রুহোল্লা খোমেনেই। এই অবস্থায় রুশদি দীর্ঘদিন পুলিসি নিরাপত্তায় ব্রিটেনে কাটান। অনবরত বদলাতে থাকেন বাসস্থান। সেই সময় তৎকালীন কংগ্রেস সরকার সবার প্রথম বইটিকে ভারতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। রাজীব গান্ধী সরকারের তৎকালীন বিদেশ রাষ্ট্রমন্ত্রী কে নটবর সিং এদিনও জানিয়েছেন, সেই সিদ্ধান্ত একেবারেই সঠিক ছিল। এর সঙ্গে তোষণের রাজনীতির কোনও সম্পর্ক ছিল না। সবটাই করা হয়েছিল আইন-শৃঙ্খলার কথা ভেবে। ১৯৯৮ সালে ইরান সরকার জানায়, রুশদির উপর জারি করা ফতোয়া প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। ফলে অজ্ঞাতবাস কাটিয়ে ফের জনসমক্ষে আসেন রুশদি। ২০০০ সাল থেকে তিনি আমেরিকায় রয়েছেন।
রুশদির উপর গতকালের হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। বিডেন-হ্যারিস প্রশাসন তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছে। হামলার নিন্দা করেছেন নিউ ইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচুলও। সরকারিভাবে ইরানের তরফে কোনও বিবৃতি শনিবার রাত পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে ওই দেশের কট্টরপন্থী সংবাদপত্রে হামলাকারীর ঢালাও প্রশংসা করা হয়েছে।