পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
তবে শুধু রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভার মঞ্চ নয়। তার আগে চার রাষ্ট্রের কোয়াড বৈঠকেও পাকিস্তানকে নিশানা করেছেন মোদি সহ অন্য রাষ্ট্রনেতারা। ফলে আফগানিস্তানে তালিবান শাসনের সূত্রপাত এবং সন্ত্রাসের আশঙ্কার চর্চায় ইসলামাবাদ রীতিমতো কোণঠাসা হয়ে পড়ল আন্তর্জাতিক মঞ্চে। একা পাকিস্তান নয়, সাম্প্রতিককালের মধ্যে মোদি এই প্রথম চীনকেও দিলেন কঠোর বার্তা। বললেন, ‘কিছু কিছু দেশকে মনে রাখতে হবে সমুদ্ররুটে সবার সমান অধিকার। সমুদ্র বাণিজ্য আন্তর্জাতিক ও সর্বজনীন। সুতরাং সমুদ্রপথকে কুক্ষিগত করে রাখা আন্তর্জাতিক বিধিনিয়মেরই লঙ্ঘন।’ স্পষ্টতই এই হুঁশিয়ারি চীনের উদ্দেশে।
কিন্তু আন্তর্জাতিক মঞ্চে হঠাৎ তীব্র আক্রমণাত্মক কেন হয়ে উঠলেন মোদি? কারণ, গত দু’দিনের মার্কিন সফরে তাঁর একের পর এক বৈঠকে স্পষ্ট হয়েছে যে, শুধু ভারত নয়, গোটা আন্তর্জাতিক দুনিয়াই উদ্বিগ্ন চীন ও পাকিস্তানকে নিয়ে। আর তা উপলব্ধি করে এদিন রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভায় রীতিমতো তুলোধোনা করেন চীন ও পাকিস্তানকে। হোয়াইট হাউসে আমেরিকা, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার জোটবৈঠক হয়েছে, যে জোটের নাম কোয়াড। এই বৈঠকের আলোচনায় উঠে এসেছে দু’টি সঙ্কটের কথা। প্রথমত, দক্ষিণ চীন সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রগুলির উপর আগ্রাসন। দ্বিতীয়ত, আফগানিস্তানের সন্ত্রাসের আঁতুরঘর হয়ে ওঠা। আর এই দু’টি সম্ভাবনাকেই সমূলে বিনষ্ট করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি কোয়াড জোটের। চীনকে টার্গেট করে চারটি দেশ স্পষ্ট জানিয়েছে, সমুদ্রপথে সব রাষ্ট্রের সমান অধিকারের রাষ্ট্রসঙ্ঘের বিধি বজায় রাখতেই হবে। এই বিধি লঙ্ঘন করে আগ্রাসী মনোভাব নিলে তা সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করা হবে। একইসঙ্গে আফগানিস্তানে সামান্যতম সন্ত্রাসের মদত দেওয়া চলবে না বলে পরোক্ষে পাকিস্তানকেই দেওয়া হয়েছে কড়া বার্তা। বস্তুত, দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আগ্রাসন এবং আফগানিস্তানকে সন্ত্রাসের ভরকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা প্রতিরোধ করতে একটি বৃহত্তর স্ট্র্যাটেজিক ও সামরিক সমঝোতায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছে চার দেশ। পাকিস্তান বিরোধিতার যে সুরের সূত্রপাত হয়েছিল কোয়াড বৈঠকে, তার অনুরণন শনিবার প্রথমে শোনা গিয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতের ফার্স্ট সেক্রেটারি স্নেহা দুবের কণ্ঠেও। তীক্ষ্ণ ভাষায় তাঁর আক্রমণ, পাকিস্তানের এই সন্ত্রাসবাদে মদতদাতার ভূমিকার জন্য গোটা বিশ্ব একাধিকবার চরম সঙ্কটে পড়েছে। আর দ্বিতীয়ার্ধে মোদির ভাষণে সেই আক্রমণাত্মক সুর ছিল আরও জোরালো।
রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভায় মোদির হাই ভোল্টেজ ভাষণের সমাপ্তি ঘটে বাংলা ভাষার হাত ধরে। তিনি রবীন্দ্রনাথের ‘স্বদেশ’ পর্যায়ের একটি গান উচ্চারণ করে চিরন্তন ভারতের শক্তির বার্তা দেন বিশ্ববাসীকে। বাংলাতেই প্রধানমন্ত্রী উচ্চারণ করেন, ‘শুভ কর্ম পথে ধর নির্ভয় গান, সব দুর্বল সংশয় হোক অবসান’।