ওয়াশিংটন: মার্কিন ড্রোন হামলায় সাধারণ নাগরিক ও শিশুদের মৃত্যু হয়েছে বলে আগেই দাবি করেছিল কাবুলে মৃতদের পরিবার। মার্কিন তদন্তে প্রমাণিত হল তাঁদের দাবি সঠিক। আমেরিকাও মেনে নিল সেই ড্রোন হামলা ‘দুঃখজনক’ ও ‘ভুল’ ছিল। ঘটনায় ক্ষমাও চেয়েছে ওয়াশিংটন। কিন্তু আমেরিকার ওই ক্ষমা চাওয়া যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন পরিবারের একমাত্র জিবীত সদস্য এমাল আহমদি। তাঁর সাফ কথা, আমেরিকা ক্ষমা চেয়েছে, এটা আমাদের কাছে যথেষ্ট নয়। কে এই কাজ করেছে, তাকে খুঁজে বের করতে হবে। যে সেনা আধিকারিক ওই কাজ করেছে, তাঁকে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। ২৯ আগস্ট কাবুলে ড্রোন হামলায় আহমদির পরিবারের সাত শিশু সহ ১০ জনের মৃত্যু হয়। আহমদির দাদার গাড়িতেই ড্রোন হামলা চালিয়েছিল আমেরিকা। বিস্ফোরণে মারা যায় আহমদির তিন বছরের শিশু কন্যা মালিকাও। অথচ ওয়াশিংটন প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিল, ড্রোন মামলায় আইএসকে জঙ্গিদের খতম করা হয়েছে। এমনকী এরা কাবুল বিমানবন্দর বিস্ফোরণে যুক্ত বলেও দাবি করেছিল আমেরিকা। কিন্তু ওই দাবি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। তদন্তের পর জানা গিয়েছে, সেই হামলা ভুল ছিল। গোয়েন্দা রিপোর্টে সতর্ক করা হয়, একটি সাদা টয়োটা নিয়ে কাবুল বিমানবন্দরে হামলা চালাতে পারে আইএসআইএস। মার্কিন সেনার আফগানিস্তান ছাড়তে তখন এক দিন বাকি। দেশ ছাড়তে কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় করছেন কাবুল বিমানবন্দরে। বন্দরের ভিতরে মার্কিন বাহিনী। বাইরে কড়া নজর রাখছে তালিবান। আশঙ্কা করা হচ্ছিল, যে কোনও সময় সেখানে হামলা চালাতে পারে আইএসকে জঙ্গিরা। এরপরই সেই সাদা গাড়িটিকে টার্গেট করে আমেরিকা। মনে করা হচ্ছিল, সেই গাড়িতে চেপেই হামলা করা হতে পারে বিমানবন্দরে। গাড়িটিকে প্রায় ৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করার পর সেটিকে ড্রোন হামলায় উড়িয়ে দেওয়া হয়। মৃত্যু হয় ১০ জনের। সেই মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন। এয়ার স্ট্রাইকে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান অস্টিন। পেন্টাগনে সাংবাদিক সম্মেলনে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড কমান্ডার জেলারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি বলেন, ‘এই হামলা ট্র্যাজিক মিসটেক।’ মৃতদের পরিবারকে কি পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার হবে, তা হিসেব করে দেখছে সরকার। কারণ ওই হামলায় মৃতদের সঙ্গে আইএসকের কোনও যোগ নেই।