কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা সংলগ্ন গ্রামে বাড়ি এই ভাগ্যবানের। বয়স মেরেকেটে তেত্রিশ। নিতান্ত ছাপোষা পরিবারের যুবক। সুমাত্রা শহরের একটি কফিন নির্মাণকারী সংস্থার কর্মী তিনি। পেরেক-হাতুড়ি নিয়ে কারবার তাঁর। কোভিড মহামারীতে কফিনের চাহিদা এখন তুঙ্গে। কাজ সেরে বাড়ি ফিরতে দেরি হয়। আগস্ট মাসের একদিন জোসুয়া বেশ রাতেই বাড়ি ফিরেছিলেন। বড্ড ক্লান্ত-অবসন্ন তিনি। দরজা খুলে চেয়ারে সবে গা এলিয়েছেন। তখনই শুনতে পান বিকট আওয়াজ। বাড়িটা যেন মুহূর্তের জন্য নড়ে উঠল! চেয়ার ছেড়ে দেখতে পান মাথার উপর টিনের ছাউনি চৌচির। সেখান দিয়ে উঁকি মারছে আকাশের তারা। বারান্দায় উঠতেই তাঁর নজরে আসে একখণ্ড পাথর। তার গঠনশৈলী সম্পূর্ণ ভিন্ন। আর পাঁচটা পার্থিব পাথরের মতো নয়। ‘পাথরটি দেখে আমি তো হতবাক! হাতে তুলে নাড়াচাড়া করতে থাকি। তখনও সেটি বেশ গরম ছিল। হাতে ছ্যাঁকাও লাগছিল।’ উল্কা কুড়িয়ে পাওয়ার এই অভিজ্ঞতা জোসুয়ার।
উল্কাপাত বা গোদা বাংলায় তারা খসে পড়া দেখলে মনবাঞ্ছা পূরণের প্রার্থনা করেন অনেকেই। কেউ কেউ আবার মুনি-ঋষির নাম জপেন। জোসুয়া সেই প্রার্থনা করেছিলেন কি না জানা নেই। তবে, পাথরটিকে খুব যত্নে তুলে রেখেছিলেন ঘরে। মোবাইলে একটি ছবিও তুলেছিলেন। পরে সেটি ফেসবুকে পোস্ট করে দেন জোসুয়া। জীবনের চাকা ঘোরা শুরু এখান থেকেই। ছবিটি ভাইরাল হয়ে নজরে আসে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের। মার্কিন বিজ্ঞানী তথা মহাকাশ সামগ্রীর সংগ্রাহক জারেড কলিন্স পাথরটি কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দেন জোসুয়াকে। রাজি হয়ে যান তিনি। কিন্তু কত টাকায় পাথরটি জোসুয়া বিক্রি করেছেন, তা প্রকাশ করেননি। তবে বিজ্ঞানীদের দাবি, উল্কাটি প্রায় সাড়ে চারশো কোটি বছরের পুরনো। ওজন ২ কেজি ১০০ গ্রাম। প্রতি গ্রামের দাম কম করে ৬৪৫ পাউন্ড, অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬৩ হাজার টাকা। সেই হিসেবে জোসুয়ার টিন ফুটো করে দেওয়া উল্কার দাম হতে পারে ৯ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা। পাথরটি আরও এক বিজ্ঞানীর হাত ঘুরে এখন অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে। সেখানে উল্কা সংক্রান্ত গবেষণার কাজে লাগবে সেটি। তার মধ্যে হয়তো লুকিয়ে রয়েছে ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি রহস্যের কোনও তথ্য। জোসুয়ার অবশ্য তাতে মাথাব্যাথা নেই। থাকার কথাও নয়। তিনি হাতুড়িপেটা জীবন ছাড়তে চলেছেন, সেটাই বড় কথা। আর বড় ইচ্ছে—‘আমাদের গ্রামে একটি বড় গির্জা গড়ব।’ সত্যিই খসে পড়া তারা খুঁজে পাওয়াও ভাগ্যের বিধান!