ওয়াশিংটন: ছোটবেলায় নিয়মিত রামায়ণ ও মহাভারত শুনতেন। আত্মজীবনীতেই এমনটাই জানিয়েছেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ছোটবেলা কেটেছে ইন্দোনেশিয়ায়। সেখানেই নিয়মিত এই দুই মহাকাব্যের নানা গল্প শুনতেন। তা থেকেই ভারত সম্পর্কে তাঁর মনে আলাদা একটি জায়গা তৈরি হয়েছে। তাঁর কথায়, ভারতের আয়তন বিরাট। এই দেশের জনসংখ্যা বিশ্বের ছ’ভাগের একভাগ। এখানে প্রায় ২ হাজার সম্প্রদায় রয়েছে। ভারতে প্রায় সাতশো ভাষায় কথা বলা হয়। আত্মজীবনীতে ওবামা লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০১০ সালেই প্রথমবার তিনি ভারতে আসেন। তবে তাঁর স্বপ্নে বারবরই ভারতের বিশেষ জায়গা ছিল। এর কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ছোটবেলায় রামায়ণ ও মহাভারত শুনতাম, হয়তো সেই কারণেই ভারতের প্রতি আগ্রহ জন্মেছিল। এছাড়া, পূর্ব এশিয়ার ধর্ম নিয়েও আমি জানতে চাইতাম। সেই সঙ্গে কলেজে আমার বেশ কয়েকজন ভারতীয় ও পাকিস্তানী বন্ধু ছিল। তাদের কাছ থেকেই ডাল ও কিমা রান্না করা শিখেছিলাম। বলিউড ছবি দেখতেও শুরু করি। এগুলিও তাঁর ভারতপ্রীতির অন্যতম কারণ হতে পারে বলে জানিয়েছেন ওবামা। মার্কিন প্রেসিডেন্টের মসনদে বসা থেকে বহু স্মৃতি উঠে এসেছে তাঁর আত্মজীবনীমূলক বই ‘অ্যা প্রমিসড ল্যান্ড’-এ। এর দুটি ভাগ রয়েছে। যার প্রথমটি মঙ্গলবার বাজারে এসেছে। সেখানে ওবামা আরও জানিয়েছেন, ভারতের প্রতি তাঁর ভালোবাসার অনেকটাই ঘিরে রয়েছেন মহাত্মা গান্ধী।
তাঁর কথায়, আব্রাহাম লিঙ্কন, মার্টিন লুথার কিং এবং নেলসন ম্যান্ডেলার মতো গান্ধীও আমার ভাবনা-চিন্তাকে অনেকটাই প্রভাবিত করেছিল। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে তাঁর অহিংস আন্দোলন শোষিত ও প্রান্তিক মানুষের মধ্যে আশার আলো দেখিয়েছিল। যুবক হিসেবে আমি তাঁর লেখা পড়েছি। যা আমার অনেক অনুভূতিকে জাগিয়ে দিয়েছিল। বইয়ের এই অংশে গান্ধীর সত্যাগ্রহ, অহিংস আন্দোলনের কথা উল্লেখ করেছেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি লিখেছেন, গান্ধীর কথা থেকেও তাঁর পদক্ষেপ আমাকে অনেক বেশি প্রভাবিত করেছিল। সত্যের জন্য তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন, জেলে গিয়েছেন। মানুষের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে উত্সর্গ করেছিলেন গান্ধী।