রূপাঞ্জনা দত্ত, লন্ডন: ‘দ্য ইন্ডিয়া লিগ’। প্রাক-স্বাধীনতা আমলে ব্রিটেনের প্রবাসী ভারতীয়রা মিলে তৈরি করেছিলেন এই সংগঠন। প্রতিষ্ঠাতা কৃষ্ণ মেনন। খ্যাতনামা জাতীয়তাবাদী নেতা। তাঁর উদ্দেশ্যই ছিল, দেশের বাইরে থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সমর্থন ও সাহায্য জোগানো। তাঁর এই উদ্যোগে সেই সময় পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহেরু, বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিতের মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। কিন্তু ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর ধীরে ধীরে এই সংগঠন তার প্রাসঙ্গিকতা হারাতে থাকে। যোগ্য নেতৃত্বের অভাব, একাধিক নতুন সংগঠন গজিয়ে ওঠায় আশির দশক থেকে তারা ক্রমশ আড়ালে চলে যায়। সম্প্রতি নয়া লক্ষ্যকে সামনে রেখে ফের নতুন চেহারায় জেগে উঠেছে এই ঐতিহাসিক ‘লিগ’। নজরে ব্রিটেনের ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিকদের তথ্যপঞ্জি তৈরি। যেখানে ধরা থাকবে হাল আমলের অভিবাসী ভারতীয়দের রুচি ও চিন্তাধারার খতিয়ান। ফুটে উঠবে বদলে যাওয়া সংস্কৃতির ছবি। নতুন প্রজন্ম কী ভাবছে— তাও দেখতে চাইছেন তাঁরা। সামনে আনতে চাইছেন সকলের মতামত ও অভিযোগ। এই উদ্দেশ্য মাথায় রেখেই একটি পূর্ণাঙ্গ অনলাইন রিপোর্ট তৈরির কাজ ইতিমধ্যে শুরু করেছে ইন্ডিয়া লিগ। পাশে পেয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে। আগামী মাসে যাবতীয় তথ্য একত্রীকরণ শেষ হওয়ার কথা। সংগঠনের চেয়ারম্যান সি বি প্যাটেল বলেন, ‘বিগত কয়েক বছর ধরে ব্রিটেনের ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিকদের মধ্যে বেশ কিছু বদল এসেছে। সাম্প্রতিক সমীক্ষা তাঁদের সমস্যাগুলি তুলে ধরবে। পাশাপাশি কীভাবে সমাধান করা সম্ভব, সে বিষয়েও পথ দেখাবে।’
এর আগে ব্রিটিশ সরকার ও বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরফে এ জাতীয় রিপোর্ট তৈরি হলেও, কোনওটাই সে অর্থে সম্পূর্ণ কাজ ছিল না। ইন্ডিয়া লিগের উদ্যোগ এখানেই আলাদা। কেবল নাগরিক তথ্যপঞ্জি তৈরি নয়, সংগৃহীত তথ্যের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক রূপান্তরের ধরনকেও সামনে আনা হবে। সবকিছু ঠিকঠাক এগলে আগামী মাসে সংগঠনের ওয়েবসাইটেই মিলবে তার হদিশ। যদিও এখানেই থেমে থাকতে
চাইছেন না তাঁরা। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এরপর প্রতি দু’-তিন বছর অন্তর নতুন করে রিপোর্ট বানানো হবে।