রূপাঞ্জনা দত্ত, লন্ডন: ঋষি সুনাক, এই মুহূর্তে ব্রিটেনের সবচেয়ে বেশি আলোচিত নাম। বুধবার ‘মিনি বাজেট’ পেশের আগে যাবতীয় জল্পনা বরিস জনসনের মন্ত্রিসভার এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত সদস্যকে নিয়েই। করোনা পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে তিনি কী দাওয়াই দেন, সেদিকেই এখন তাকিয়ে ব্রিটেনের মানুষ। তাঁর বিরোধীরাও মানেন, সুনাকের হাতে ‘জাদুদণ্ড’ রয়েছে। তাই, এই কঠিন পরিস্থিতিতে তাঁর আর্থিক নীতি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যকে চাঙ্গা করতে কতটা অক্সিজেন জোগাতে সক্ষম হয়, তা নিয়ে প্রত্যাশার পারদ চড়ছেই।
যোগ্যতার জোরেই সুনাক নিজেকে বরিস জনসন মন্ত্রিসভার ‘ব্লু-আইড বয়’ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। ইনফোসিসের যুগ্ম-প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ কৃষ্ণমূর্তির জামাইয়ের প্রতি পূর্ণ সমর্থন রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর প্রধান রাজনৈতিক উপদেষ্টা ডমিনিক কামিংসের। সম্প্রতি সুনাক প্রকাশ্যেই নিজেকে বরিস জনসন শিবিরের অনুগামী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। শাসক কনজারভেটিভ শিবিরের প্রত্যেক সদস্যের সঙ্গেই সুনাকের ব্যক্তিগত সম্পর্ক বা সমীকরণ বেশ ভালো। আর ঘরেবাইরে এই গ্রহণযোগ্যতার কারণেই মনে করা হচ্ছে, ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন তিনিই। দেশের বণিকসমাজের আস্থাও তাঁর এই দ্রুত উত্থানের ক্ষেত্রে একটা বড় পাওনা। ব্রিটেনের মুখ থুবড়ে পড়া ব্যবসাগুলিকে চাঙ্গা করার ক্ষেত্রে আগাগোড়াই ইতিবাচক মনোভাব নিয়েছেন সুনাক। রাজকোষ থেকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও কার্পণ্য করেননি। করোনা পরিস্থিতিতে ‘মিনি বাজেট’ পেশের আগে অবশ্য বেকারত্বের সমস্যার উপযুক্ত মোকাবিলাও তাঁর কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি রয়েছে বিপুল সংখ্যক মানুষের চাকরি খোয়ানোর মতো সমস্যাও।
ঋষি সুনাক, প্রীতি প্যাটেল ও অলোক শর্মা— বরিস জনসন মন্ত্রিসভায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের (যথাক্রমে অর্থ, স্বরাষ্ট্র ও বাণিজ্য) দায়িত্বে রয়েছেন এই তিন ভারতীয় বংশোদ্ভূত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের উপর ব্রিটেনের এই নির্ভরতা স্বভাবতই ভবিষ্যতে আরও বড় স্বপ্ন দেখতে সাহস জোগাচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে বরিস জনসনের উত্তরসূরি হিসেবে ব্রিটেনের রাজনৈতিক মহলে সুনাককে নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।