রাষ্ট্রসঙ্ঘ: আমেরিকা ও জার্মানি ভারতের পাশে দাঁড়ানোয় রাষ্ট্রসঙ্ঘে কোণঠাসা পাকিস্তান। পরিস্থিতি এমনই যে, করাচি স্টক এক্সচেঞ্জে জঙ্গি হামলার নিন্দা জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতির দিনক্ষণও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, গোটা বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে ইসলামাবাদের তরফে জারি করা দু’টি পৃথক বিবৃতি। কয়েকদিন আগে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ওসামা বিন লাদেনকে ‘শহিদ’ আখ্যা দেন। যে মন্তব্যের জেরে পাকিস্তানের ঘরে-বাইরে বিস্তর জলঘোলা হয়। এই বিতর্কের পরে করাচি হামলা প্রসঙ্গে বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির বক্তব্যে অন্য চেহারা নেয়। কুরেশি বলেন, ‘স্টক এক্সচেঞ্জে নাশকতার পিছনে ভারতের নিশ্চিত মদত রয়েছে।’ প্রমাণ ছাড়া তাঁর এই অভিযোগকে ভালো চোখে নেয়নি রাষ্ট্রসঙ্ঘ। পাশাপাশি ইমরানের মন্তব্যকে সামনে টেনেও পরিষদের একাধিক সদস্য অসন্তোষ প্রকাশ করেন। লাদেনের মতো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদীকে ‘শহিদ’ ঘোষণার পর ইসলামাবাদ কী করে জঙ্গিহানা নিয়ে নিন্দাসূচক বিবৃতি আশা করে— এই দ্বিচারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকে। যার ফলে বিবৃতির প্রস্তাব পিছিয়ে দেওয়ার কথা ওঠে। চীনের তরফে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় জোরদার সওয়াল করা হলেও তা ধোপে টেকেনি। প্রথমে জার্মানি, পরে আমেরিকা ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে খসড়া প্রস্তাব স্থগিতের আর্জি জানায়। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে তা চূড়ান্ত হতেই সন্ত্রাসদমন ইস্যুতে রাষ্ট্রসঙ্ঘ পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিল বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
অন্যদিকে বুধবার যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত আরেকটি বৈঠকে ‘কোভিড-১৯ প্রস্তাব’ পাশ হয়। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলি সর্বসম্মতিক্রমে জানায়, করোনা পরিস্থিতিতে সমস্ত রকমের সংঘর্ষ থেকে তারা বিরত থাকবে। যদিও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে আল-কায়েদা কিংবা আইএসের মতো জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান এই প্রস্তাবের আওতায় আসবে না বলে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেইরেস। নিরাপত্তা পরিষদের তরফে এদিন সাফ জানানো হয়, সন্ত্রাসবাদীরা কোনওভাবেই অস্ত্রবিরতির মানে বোঝে না। তাই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সংঘর্ষবিরতি আদতে নিরর্থক।