গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
ভারতের সঙ্গে ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। বাণিজ্যিক আদান-প্রদানও অত্যন্ত ভালো। সম্পর্কের সেই পরম্পরা অক্ষুন্ন রেখেই বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগের বহর বাড়াতে চাইছে ডব্লিউএমআইপি। তাদের বক্তব্য, আমেরিকার পরেই ভারতীয় শিল্পপতিরা ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসে বিপুল অঙ্কের পুঁজি লগ্নি করেন। এখনও করে আসছেন। তাতে কর্মসংস্থানও বাড়ছে। গত এক দশকে প্রায় ১৩ হাজার নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই ভারতের বেশ কয়েকটি নামজাদা সংস্থা বিভিন্ন ক্ষেত্রে লগ্নি করেছে। তালিকায় রয়েছে টাটা মোটরস, স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া, ইনফোসিস, ওলা, এনজেন গ্লোবাল, সুপ্রাজিত গ্রুপ, এল্ডার ফার্মাসিউটিক্যালস সহ একাধিক সংস্থা।
পর্যটন, শিক্ষাক্ষেত্রেও ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসের সঙ্গে ভারতের বোঝাপড়া অত্যন্ত ভালো। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ সালে ৩৮ হাজারের বেশি পর্যটক ব্রিটেনের এই প্রদেশে এসেছিলেন। পাঁচ বছরে সেই সংখ্যা বেড়েছে ১৬ শতাংশ। এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভারতীয় পড়ুয়াদের সংখ্যাও বেড়েছে ৩৩ শতাংশ। লন্ডনের বাইরে ব্রিটেনের সবচেয়ে বেশি ভারতীয়র বসবাসও এখানে। এই মুহূর্তে সংখ্যাটা ২ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। ডব্লিউএমআইপি’র চেয়ারম্যান ড. জ্যাসন ওহরা ওবিই বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে উত্পাদনমুখী এবং ইতিবাচক অর্থনীতির লক্ষ্যে এই ধরনের বলিষ্ঠ পদক্ষেপ দরকার ছিল। দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে আমরা ভারত ও স্থানীয় শিল্পপতিদের লগ্নির নতুন পরিসর তৈরির চেষ্টা করব। ইতিহাসকে সঙ্গে নিয়েই পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে নিশ্চিত ভবিষ্যতের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে চাই।’ জ্যাসন নিজেও একজন শিল্পপতি। ইস্ট এন্ড ফুড পিএলসি’র মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রাক্তন সহ প্রতিষ্ঠাতা এবং ডিরেক্টর। ভারতীয় বণিকমহলের কাছে তাঁর আহ্বান, ‘আমি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, আপনারাও এখানে বিনিয়োগ করুন। আপনাদের লগ্নি বৃথা যাবে না।’
ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস গ্রোথ কোম্পানির চিফ এক্সিকিউটিভ নীল রামি বলেন, ‘এই অঞ্চলে পর্যটন, ব্যবসা ও লগ্নি বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ডব্লিউএমআইপি। আমরা ২০২২ কমনওয়েলথ গেমসের প্রস্তুতি নিচ্ছি। সে ক্ষেত্রে এই উদ্যোগ বিশেষ কার্যকর হবে। জ্যাসনের সুরে তিনিও বলেছেন, ‘এই প্রদেশে লগ্নি করে একাধিক ভারতীয় সংস্থা লাভের মুখ দেখেছে। আমাদের পদক্ষেপ সেই পরিসরকে আরও উন্মুক্ত করে দেবে। ব্রিটেন এবং ভারতীয় দুই দেশের কাছেই বিপুল সুযোগ তৈরি হবে।’
অন্যদিকে, কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই)-এর ব্রিটেন শাখার প্রধান ও প্রতিনিধি লক্ষ্মী কউল বলেন, ‘সংস্কৃতি, বৈচিত্র এবং বাণিজ্যের অপূর্ব সংমিশ্রণ ঘটেছে ওয়েস্ট মিডল্যন্ডসে। নতুন উদ্ভাবন এবং গবেষণার জন্য ভারতীয় সংস্থাগুলির কাছ গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হল এই প্রদেশ। আমরা ডব্লিউএমআইপি’র অংশ হতে পেরে আমরা খুব খুশি।’
ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসের মেয়র অ্যান্ডি স্ট্রিট বলেন, ‘নতুন এই উদ্যোগ শুধু বাণিজ্যের পরিসরই বৃদ্ধি করবে না, ব্রিটেন এবং ভারত যে সব সামাজিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে, তার সমাধান করতেও সহায়ক হবে।’