নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: যে মারাত্মক সংক্রামক অসুখে পৃথিবীর আধ কোটিরও বেশি মানুষ আক্রান্ত, তিন লক্ষের বেশি মৃত, সেই ‘কোভিড ১৯’ নিয়ে ভুল তথ্য হু হু করে ছড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ফল কী হতে পারে সহজেই অনুমেয়। বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক জার্নাল নেচার তাদের সাম্প্রতিক ‘নেচার ব্রিফিং’ সংখ্যায় জানিয়েছে বিস্ফোরক তথ্য— করোনা পর্বে করা ২০ কোটি ট্যুইটের প্রায় অর্ধেকই ভুয়ো ও মিথ্যা! কার্নেগি মেলোন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের উদ্ধৃত করে এই তথ্য জানানো হয়েছে। গবেষকরা জানু্য়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে করা ২০ কোটি করোনা ট্যুইট নিয়ে সমীক্ষা চালান। দেখা যায়, ৪৫ শতাংশ ট্যুইটই এসেছে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট থেকে। তাঁদের আশঙ্কা, এগুলি সবই ‘ইন্টারনেট বট’ বা ‘ওয়েব রোবট’-এর কীর্তি! পিছনে থাকতে পারে পাকা মাথা। ছড়ানো হয়েছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে, মিথ্যা তথ্য দাবানলের মতো বিশ্বময় ছড়াতে। তাঁরা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত এই নোভেল ভাইরাস নিয়ে অন্তত ১০০ ধরনের মিথ্যা তত্ত্ব ছড়ানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজ্যে দিন শুরু হতে না হতেই করোনা নিয়ে হাজারো প্রচার, গল্প, তথ্যমূলক মেসেজ ভাসতে থাকে মোবাইল স্ক্রিনে। কতটা সত্যি, কোনটা সত্যি, অধিকাংশ মানুষই জানেন না। ফরওয়ার্ড হতে হতে লাখো মানুষের কাছে তা পৌঁছয়। এই দুশ্চিন্তার রোগ সম্পর্কে তৈরি হয় নানা ধারণা। সেগুলি কখনও ঠিক, কখনও সম্পূর্ণ অসত্য। নেচার ব্রিফিং-এ প্রকাশিত লেখায় জানানো হয়েছে, অসত্য ট্যুইট প্রচারের জেরে ফাইভ জি ও করোনার সম্পর্ক রয়েছে বলে ভুল বার্তা ছড়িয়ে পড়েছিল বিভিন্ন দেশে। ব্রিটেনে কয়েকটি ফাইভ জি টাওয়ার পুড়িয়েও দেওয়া হয়েছিল এর ফলে।
কীভাবে ধরা পড়ল প্রায় অর্ধেক করোনা ট্যুইট আসলে ভুয়ো? গবেষকরা কয়েকটি পদ্ধতি নিয়েছিলেন। যখন দেখা যায়, একই সময়ে একইসঙ্গে ট্যুইটের পর ট্যুইট আসতেই থাকছে, তখন তা আসলে সন্দেহজনক ও সম্ভাব্য ‘কপি-পেস্ট’। অন্যদিকে ওই সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে ট্যুইটার জানিয়েছে, ইতিমধ্যে করোনা নিয়ে বিভ্রান্তিকর আলোচনা চালানো ১৫ লক্ষ অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। চ্যালেঞ্জও করা হয়েছে তাদের। এছাড়া করোনা সংক্রান্ত অসত্য বার্তা দেওয়ায় হাজার হাজার ট্যুইট মুছে ফেলা হয়েছে।