বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
ব্রিটেনে প্রায় ২৬ লক্ষ মুসলিম রয়েছেন। রমজান মাস শেষে প্রতিবারই তারা খুশির ঈদে মেতে ওঠেন। কিন্তু ব্যতিক্রম ২০২০। দেশের পুরো মুসলিম সমাজ গোটা রমজান মাস কাটিয়েছেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। লকডানের জেরে বিগত ৯ মাস ধরে মসজিদগুলো বন্ধ থাকায় নামাজও ঘরে পড়তে হয়েছে। অকল্পনীয় কাজের চাপে ঠিক সময়ে রোজা ভাঙতে পারেননি এই সম্প্রদায়ভুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা। কিন্তু এসবকে দূরে রেখেই ঈদ পালিত হবে তার নিজের মাহাত্ম্যে। হয়তো সবাই এক জায়গায় হতে পারবেন না, কিন্তু পবিত্র ঈদের খুশি গোটা সম্প্রদায়কে এক সুতোয় বেঁধে রাখবে। চলতি বছরে যাতে বাড়ির মধ্যে ঈদ পালন করা হয়, সেজন্য সম্প্রদায়ের কাছে আর্জি জানিয়েছে দ্য মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন। আর একান্তই যদি কেউ সমবেতভাবে তা পালন করতে চান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই তা করতে হবে বলে কড়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
বছর ৩০-এর হালিমা খাতুন। ঘরে কাটাতে হলেও, এবারের ঈদ একটু অন্যরকম এই লেখিকার কাছে। কারণ, সদ্য মা হয়েছেন তিনি। নবজাতক পুত্রসন্তান, ২ বছরের মেয়ে আর স্বামী-এরাই তাঁর এবারের ঈদের সঙ্গী। ভিডিও কলেই পরিবারের সঙ্গে ঈদের খুশি ভাগ করে নেবেন। আর এবার রান্না হবে ছোট মেয়ের পছন্দমতো।
ডাঃ মহম্মদ আব্বাস খাকি। বয়স ৩৪। গতবার ঈদে বাংলাদেশ ছিলেন। রোহিঙ্গাদের সেবা-সুশ্রূষায়। এবার যাওয়ার কথা ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার একটি এইডস ক্লিনিকে। কিন্তু লকডাউনে আটকে পড়েছেন তিনি। তাই ব্রিটেনে থেকেই করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছেন তিনি। তাঁর মতে, এবারের ঈদটা অন্যরকম। নিজের আনন্দ-উৎসবের জন্য সময় বের করার চেয়ে অন্যের জন্য সময় দেওয়াটা প্রয়োজন। অন্যকে গুরুত্ব, সম্মান দেওয়ার কথা ইসলাম ধর্মেই বলা আছে। আমি ভাগ্যবান যে, এই পবিত্র রমজান মাসে সেই কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। দুঃখ শুধু একটাই। বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ পালনের সুযোগ থাকলেও, বিধিনিষেধের কারণে তাঁদের থেকে স্নেহাশিসের ছোঁয়া পাব না।
ডাঃ খাকির সঙ্গেই চ্যানেল ফোর-এ ‘রমজান ইন লকডাউন’ নামে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন মুনা গ্রিন। পেশায় শিক্ষক। পাশাপাশি কলকাতার যোগও রয়েছে। তাঁর মায়ের শৈশব কেটেছে ক্যামাক স্ট্রিটে। মুনার অভিমত আবার একটু অন্য। তিনি বলছেন এবারের রমজান মাস আমাদের শিখিয়েছে কীভাবে ন্যূনতম চাহিদা নিয়ে জীবন কাটাতে হয়। তাই ভাইয়ের বাড়ির বাগানে সপরিবারে ঈদ পালন করলেও, সামাজিক দূরত্ব যেন বজায় থাকে, সেটা নিশ্চিত করেছেন তিনি। কারণ, এবার যে ঈদ কাটাতে হবে লকডাউনের বিধিনিষেধ মেনেই।