গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
প্রায় দু’মাসের অবিরাম লড়াইয়ের পর করোনা ভাইরাসের মহামারীকে কিছুটা হলেও বাগে আনতে সক্ষম হয়েছে ইতালি ও স্পেন। হাসপাতালের আইসিইউগুলিতে রোগীর ভিড় অনেকটাই কমতে শুরু করেছে। এতদিন একটানা লড়াই চালানোর পর ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত হাসপাতালগুলির চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের মানসিক বিকার দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন আত্মহত্যাও করেছেন। আবার অনেক চিকিৎসক, নার্সদের শরীরে থাবা বসিয়েছে মারণ করোনা। সব মিলিয়ে মানসিকভাবে চরম বিধ্বস্ত তাঁরা। এই প্রবণতা দেখে প্রমাদ গুনছে প্রশাসন। মানসিকভাবে ভেঙে পড়া স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য মনোবিদদের সঙ্গে আলোচনা করে বিশেষ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
রোমের পোপ জন হাসপাতালের নার্স মাদ্দালেনা ফেরারি এতদিন পর মাস্ক খুলতে গিয়ে কেঁদেই ফেললেন। এই মাস্ক আর গ্লাভসই এতদিন তাঁর রক্ষাকবচ ছিল। যুগিয়েছে লড়াই করার শক্তিও। কোনওদিন হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফিরলেও মাস্ক খুলতেন না। যাতে পরিবারের অন্যরা সংক্রামিত না হয়ে পড়েন। চোখের জল মুছতে মুছতে ফেরারি বললেন, ‘আমরা একটা প্রজন্মকে হারালাম। এইসব মানুষগুলির কাছ থেকে অনেক কিছুই শেখার ছিল, জানার ছিল।’ ইতালি বা স্পেনের ষাটোর্ধ্ব একটি প্রজন্ম যেন সত্যিই হারিয়ে গিয়েছেন। যেন একটি যুগের অবসান ঘটেছে। নিত্যদিন একটু একটু করে সেইসব মানুষের মৃত্যু নাড়িয়ে দিয়ে গিয়েছে হাসপাতালের কর্মীদের। এইরকম মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে ইতালিতে দু’জন নার্স আত্মহত্যা করেছেন। অনেকের মধ্যেই অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মনস্তাত্ত্বিক ক্লাস করানোর পাশাপাশি তাঁদের অনলাইনে বিনামূল্যে মনোবিদের পরামর্শ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে সরকার। এছাড়া, মানসিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে হাসপাতালগুলিও স্বাস্থ্যকর্মীদের ছোট-ছোট দলে ভাগ করে বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করছে। এই পরিস্থিতিতে নিয়ে উদ্বিগ্ন লোম্বার্ডি এলাকার স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমির ডিরেক্টর অ্যালেক্সজান্ডার কলম্বো জানিয়েছেন, ‘দু’মাস ধরে আমাদের লড়াই চলছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা মানসিক এবং শারীরিকভাবে বিপর্যস্ত। অনেক চিকিৎসক এবং নার্স দীর্ঘদিন ধরে পরিবার থেকে দূরে রয়েছেন। দিনরাত এক করে তাঁরা কাজ করছেন। পরিবারের কথা ভেবে নিজেদের আইসোলেশনে রেখেছেন। এই পরিস্থিতি থেকে তাঁদের দ্রুত বের করা দরকার। না হলে সমস্যা আরও বাড়বে।’