ব্যবসায়ে যুক্ত হলে এই মুহূর্তে খুব একটা ভালো যাবে না। প্রেম প্রণয়ে বাধা। কারও সাথে ... বিশদ
শুরুর দিকে বিশেষ গুরুত্ব না দিলেও, এখন করোনার নতুন ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে আমেরিকাই। অনেকেই বলছেন, ইতালির মতো পরস্থিতির দিকেই এগচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত মার্কিন মুলুকে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার। মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ২৫০ জনের। যার এক-চতুর্থাংশই নিউ ইয়র্কে। বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ জনসংখ্যা লকডাউনে রয়েছে। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যা বলছে, মৃত্যুর হার গত তিনদিনেই দ্বিগুণ হয়েছে। আমেরিকায় করোনা ভাইরাসের মূলকেন্দ্র নিউ ইয়র্ক শহরকে দেশের অন্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার ভাবনাচিন্তা শুরু করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর বক্তব্য ছিল, দেশের উত্তর-পূর্ব অংশকে বাঁচাতে দু’সপ্তাহের জন্য নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি এবং কানেটিকাটের কিছু অংশে কোয়ারেন্টাইন জারি হবে। যদিও, প্রেসিডেন্টের এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করে বেঁকে বসেন নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কোউমো। গভর্নরের মতে, ‘এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। কার্যত যুদ্ধঘোষণার শামিল। যদি প্রেসিডেন্ট বলতেন আমরা ভৌগলিকভাবে অবরুদ্ধ, তাহলে সেটা লকডাউন হিসেবে বিবেচিত হতো। যেটা চীনের উহানে হয়েছিল। আর সেটা হলে এই মহামারীর পরিস্থিতিতে তীব্র বিশৃঙ্খলা এবং অরাজকতার সৃষ্টি হবে।’
মেয়রের বিরোধিতায় শেষপর্যন্ত পিছু হটেন ট্রাম্প। ৮ ঘণ্টার মধ্যেই ফের ট্যুইট করে জানিয়ে দেন, কোয়ারেন্টাইনের প্রয়োজনীয়তা নেই। নিজের পক্ষে সাফাই দিতে গিয়ে তিনি লেখেন, ‘লকডাউন কার্যকর করতে গিয়ে ভারতে দিনমজুরদের শোচনীয় অবস্থা হয়েছে। আগের ট্যুইটে আমি যাবতীয় সফরে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারির কথা বলতে চেয়েছিলাম।’ শেষ পর্যন্ত অবশ্য সফরের উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করে ট্রাম্প প্রশাসন।
এদিকে, ভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় মানুষকে প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না বেরনোর পরামর্শ দিয়েছে সেন্টার ফর ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন। তবে, নিউইয়র্ক নিয়ে আশার কথা শুনিয়েছেন গভর্নর কোউমো। সেখানে সংক্রমণ ছড়ানোর গতি কমে এসেছে বলে জানা তিনি।
এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দুঃশ্চিন্তা বাড়িয়ে মৃতের তালিকায় ঢুকে পড়ল এক দুগ্ধপোষ্য শিশুও। করোনার ভরকেন্দ্র হয়ে ওঠা নিউ ইয়র্কের একটি হাসপাতালে শিশুটির মৃত্যু হয়। আমেরিকায় এই প্রথম কোনও দুগ্ধপোষ্যের মৃত্যুতে উদ্বেগ বাড়ছে চিকিৎসক মহলে। কপালের ভাঁজ চওড়া হচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসনেরও।
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই মহূর্তে মার্কিন মুলুকে আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ ২১ হাজার। নিউ ইয়র্কে আক্রান্ত হয়েছেন ৫২ হাজার মানুষ। মারা গিয়েছেন ৫১৭ জন। নিউ ইয়র্কের ইলিনয়ের জনস্বাস্থ্য দপ্তর (আইডিপিএইচ) সূত্রে খবর, ক’দিন আগে শিকাগোতে করোনার প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দেয় ওই দুগ্ধপোষ্যের। পরে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়। শনিবার রাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সে। আইডিপিএইচের অধিকর্তা নগোজি ইজাইক বলেছেন, ‘সত্যিই আমরা খুব দুঃশ্চিন্তায় পড়েছি। ওই শিশুর মৃত্যুতে কোভিড-১৯ ভাইরাস কতখানি কার্যকর ভূমিকা নিয়েছিল, তা খতিয়ে দেখতে আমরা বদ্ধপরিকর।’ শিশুটির মৃত্যুতে গভীর দুঃখপ্রকাশ করেছেন ইলিনয়ের গভর্নর জে বি প্রিৎজেকার।