কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
আততায়ী সেনাকর্মীর তাণ্ডবে রাতভর আতঙ্কের প্রহর কাটায় থাইল্যান্ডের শপিং মলটি। ভিতরে আটকে বহু মানুষ। সঙ্কট মোকাবিলায় সেখানে মোতায়েন করা হয় শার্প-শ্যুটারদের। গোটা রাত চলে গুলি বিনিময়। ১৭ ঘণ্টার উৎকণ্ঠার অবসান হয় রবিবার সকালে। মারা পড়ে আততায়ী। প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান-ও-চা এদিন বলেন, ‘২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সি হল ১৩ বছরের এক কিশোর।’ হাসপাতালের বাইতে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘থাইল্যান্ডে এই ঘটনা হতাশাজনক। আমি চাই, এরকম সঙ্কট যেন ভবিষ্যতে আর না দেখা দেয়।’ কিন্তু এক সেনাকর্মী কেন এরকম নারকীয় হত্যালীলা চালাল? প্রধানমন্ত্রী জানান, বাড়ি বিক্রি সংক্রান্ত ‘ব্যক্তিগত সমস্যা’র কারণে এই হত্যালীলা চালিয়েছে ওই সেনাকর্মী। শনিবার দুপুরে একটি সেনা ব্যারাকের কাছে হত্যালীলা শুরু করে সে। পরে শপিং মলে ঢুকে পড়ে। শুরু হয় তাণ্ডব। হামলাকারী সেনার এক জুনিয়র অফিসার। নাম সার্জেন্ট-মেজর জাকরাপান্থ থোমা। থাইল্যান্ডের অন্যতম বড় একটি ব্যারাক থেকে এম৬০ মেশিনগান, রাইফেল ও কার্তুজ হাতিয়ে এনে এই হত্যালীলা চালায় সে। অধিকাংশ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে ওই শপিং মল ও তার আশপাশে।
উদ্ধার হওয়ার পর আতঙ্কের সেই মুহূর্তের বর্ণনা দিয়েছেন শপিং মলে আটকে পড়া বহু মানুষ। ৪৮ বছরের সতিয়ানি উনচালি বলেন, ‘স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। বেঁচে ফিরব, ভাবতেই পারিনি।’ মুড়ি মুড়কির মতো গুলি চলার শব্দ শুনে একটি জিমের শৌচাগারে ঢুকে লুকিয়ে ছিলেন উনচালি। অলড্রিন বালিকুইং নামে এক শিক্ষিকা জানান, গুলি চলা শুরু হতেই মলের স্টাফরা তাঁকে একটি স্টোররুমে ঢুকিয়ে দেন। এই শিক্ষিকার কথায়, ‘ওই স্টোররুমের মধ্যে ছ’ঘণ্টা আতঙ্কের প্রহর কেটেছে আমাদের। এখনও স্বাভাবিক হতে পারছি না।’
পুলিস ও কমান্ডো বাহিনী মলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর আটকে থাকা মানুষকে উদ্ধারের কাজ শুরু হয়। পাশাপাশি রাতভর চলে গুলির লড়াই। গুলি চালনার গোটা পর্ব ফেসবুকে বর্ণনা করতে থাকে আততায়ী সেনা। হত্যালীলার সূচনা শনিবার দুপুরে। প্রথমে এক সিনিয়র সেনা অফিসারের বাড়িতে গুলি চালায় সে। সেখানে অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়। তার মধ্যে একজন সেনাকর্মী। সেখান থেকে বেরিয়ে কাছেই সেনা ব্যারাকের সামনে গুলি চালায়। তারপর সেনার একটি গাড়ি নিয়ে শপিং মলে চলে আসে। এই গোটা পর্বে নিজের ছবি পোস্ট করতে থাকে ফেববুকে। হামলা নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্যও করতে থাকে। এর মধ্যে একটি ভিডিওতে আততায়ীকে বলতে শোনা যায়, ‘ক্লান্ত হয়ে পড়েছি... আমি আর আঙুল টানতে পারছি না।’ হাতের মুদ্রায় বন্দুকের ট্রিগার সম্পর্কে ছিল তার এই ইঙ্গিত।
রাতভর অভিযানের পর সকালে পুলিস ও সেনা কমান্ডোদের হাসি মুখে মল থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। ইঙ্গিতটা স্পষ্ট, আততায়ী খতম।