বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
ইংল্যণ্ডের ল্যাঙ্কাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল স্কুলের জোনাথন এম রিড, আমেরিকার ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেরেক এ টি কামিং, ইংল্যাণ্ডের গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্ডনিয়াপ হো প্রমুখ গবেষক, পরিসংখ্যানবিদ ও বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এক্ষেত্রে মাত্র ৫.১ শতাংশ ঘটনাই নথিভুক্ত হচ্ছে। ৯৪.৯ শতাংশ করোনা আক্রান্তের কথা কেউ জানেনই না। তাঁরা যে আক্রান্ত হয়েছেন, সেকথা হয়তো তাঁরা নিজেরাও জানেন না। মহামারীবিদ্যা বা এপিডেমিওলজি’র হিসেব অনুযায়ী, সেই সংখ্যাটির হিসেব করলে বাস্তবে আক্রান্তের সংখ্যা আসলে কয়েক লক্ষ। মোটেই কয়েক হাজার নয়। কিছুদিন আগে প্রকাশিত ওই গবেষণাপত্রে তাঁরা জানিয়েছিলেন, তাঁদের প্রস্তাবিত হিসেবে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হতে পারে ১ লক্ষ ৩২ হাজার ৭৫১ থেকে ২ লক্ষ ৭৩ হাজার ৬৪৯! ২৪ জানুয়ারি প্রকাশিত তাদের ওই গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছিল, ৪ ফেব্রুয়ারিতে শুধু চীনের উহানেই করোনা আক্রান্তের আনুমানিক সংখ্যা আড়াই লক্ষের মতো। সেখানে ওইদিন বাস্তবে গোটা বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যাই ৪ ফেব্রুয়ারি ছিল ২০ হাজারের কিছু বেশি!
এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংখ্যাও তাদের ডেঙ্গু সংক্রান্ত ফ্যাক্ট শিট বা পরিসংখ্যানে এক বছরে আক্রান্তের সংখ্যা বলতে গিয়ে একটি বিশাল সংখ্যা তুলে ধরেছিল। যা দেখে বহু চিকিৎসকের ভিরমি খাওয়ার যোগাড় হয়েছিল। যদিও পোড়খাওয়া পরিসংখ্যানবিদ ও চিকিৎসক মাত্রেই জানেন, আক্রান্ত এবং নথিভুক্তদের মধ্যে পরিসংখ্যানের আকাশ-পাতাল তফাৎ হবে। কারণ, আক্রান্তদের অনেকেরই সেভাবে সংক্রমণের বহিঃপ্রকাশ হয় না। যাঁদের ক্ষেত্রে বহিঃপ্রকাশ হয় এবং অসুস্থতা বোধ করেন, তাঁরাই শুধু হাসপাতালে যান এবং তাঁদের তথ্যই সরকারিভাবে নথিভুক্ত হয়। ফলে সবসময় আক্রান্তের যথার্থ সংখ্যা ফুটে ওঠে না।
কেন মহামারী বিশেষজ্ঞ ও পরিসংখ্যানবিদদের এই হিসেব এত গুরুত্বপূর্ণ? কল্যাণীতে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের জনস্বাস্থ্য নিয়ে স্নাতকোত্তর পঠনপাঠনের ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথের কার্যনিবাহী অধিকর্তা ডাঃ অসিত বিশ্বাস বলেন, লড়াইয়ে নামতে হলে শত্রুপক্ষকে ঠিকমতো মেপে নামাই উচিত। আর বর্তমান সরকারি হিসেব কখনও সেই প্রকৃত ছবি তুলে ধরে না। যা প্রকৃতভাবে উঠে আসে মহামারীবিদ্যা বা এপিডেমিওলজি’র তত্ত্বে। উন্নয়নশীল দেশে যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হন, তাঁরাই আক্রান্ত। আর উন্নত দেশে অল্প কিছু সংক্রমণ হলেই আক্রান্ত হিসেবে ধরা হয়। কারণ, সমাজে, পরিবেশে তো তাঁরা আছেন। উবে যাননি। তাই করোনা মহামারী মোকাবিলার জন্যও সঠিক পরিসংখ্যান বা অন্তত আনুমানিক বৃহত্তর অবস্থাটাও বোঝা উচিত।