হিউস্টন, ১১ জানুয়ারি (পিটিআই): সলতে পাকানো শুরু হয়েছিল সেই ২০১৭ সালে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছিল, মহাজাগতিক নানা রহস্য ভেদ করতে ধাপে ধাপে চাঁদ এবং মঙ্গলে অভিযান হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে মহাকাশচারীদের পাঠানো হবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনেও। নাসার সেই বহুপ্রতীক্ষিত ‘আর্টেমিস’ প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যেই ১১ জন নভশ্চরের নাম চূড়ান্ত হয়েছে। আর তাতেই জায়গা করে নিয়েছেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তিনি মার্কিন বায়ুসেনার কর্নেল রাজা জন ভারপুতুর চারি। শুক্রবার হিউস্টনে নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে চারি সহ ১১ জন মহাকাশচারীকে রুপোর পিন প্রদান করে প্রকল্পে তাঁদের আনুষ্ঠানিক যোগদানের স্বীকৃতি দিল নাসা কর্তৃপক্ষ। নাসার এই রেওয়াজ চলে আসছে সেই ১৯৫৯ সাল থেকে। ‘মার্কারি ৭’ অভিযানের মহাকাশচারীদের প্রথম এই রুপোর পিন দেওয়া হয়েছিল। প্রথা অনুযায়ী, অভিযানে আনুষ্ঠানিক যোগদান করলে মহাকাশচারীদের রুপোর পিন দেওয়া হয়। প্রথম মহাকাশ অভিযান সম্পন্ন করলে মেলে সোনার পিন। শুক্রবারের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নাসার প্রশাসক জিম ব্রাইডেনস্টাইন বলেন, ‘আমাদের আর্টেমিস প্রকল্পের জন্য ২০২০ সালটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।’ এরপরই নির্বাচিত ১১ মহাকাশচারীর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এঁরা প্রত্যেকেই আমেরিকার সেরা। এক অভাবনীয় সময়ে ওঁরা আমাদের মহাকাশ গবেষণার অংশ হতে চলেছেন।’
কর্নেল রাজা জন ভারপুতুর চারির বাবা শ্রীনিবাস চারি তরুণ বয়সে হায়দরাবাদ থেকে মার্কিন মুলুকে চলে আসেন। উদ্দেশ্য ছিল, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিগ্রি লাভ এবং সফল কেরিয়ার তৈরি করা। ফলে বাড়িতে বরাবরই পড়াশোনার পরিবেশ ছিল বলে জানিয়েছেন কর্নেল চারি। তাঁর কথায়, ‘আমার বাবা এদেশে শিক্ষালাভের জন্য এসেছিলেন। পরে তিনি সেই শিক্ষার আসল গুরুত্ব বুঝতে পারেন। আমাকেও তিনি সেভাবেই মানুষ করেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বরাবরই বাড়িতে পড়াশোনার পরিবেশ ছিল। ছোট থেকেই আমি পড়াশোনার প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছি। আমি মনে করি, সাফল্য পেতে গেলে খাটতে হবেই।’
মার্কিন বায়ুসেনার অ্যাকাডেমি থেকে অ্যাস্ট্রোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে স্নাতক পাশ করেন কর্নেল চারি। এরপর ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে এরোনটিক্স-এ স্নাতকোত্তর এবং মেরিল্যান্ডের নাভাল টেস্ট পাইলট স্কুল থেকে ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। সেনাবাহিনীতে থাকাকালীন ক্যালিফোর্নিয়ার এডওয়ার্ড বায়ুসেনা ঘাঁটিতে ৪৬১তম ফ্লাইট টেস্ট স্কোয়াড্রনের কমান্ডারের দায়িত্ব এবং এফ-৩৫ ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট ফোর্সের ডিরেক্টরের দায়িত্ব সামলেছেন বছর একচল্লিশের কর্নেল চারি।