ব্যবসাসূত্রে উপার্জন বৃদ্ধি। বিদ্যায় মানসিক চঞ্চলতা বাধার কারণ হতে পারে। গুরুজনদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন থাকা ... বিশদ
তেহরান বিমানবন্দর সূত্রে জানানো হয়েছে, এদিন স্থানীয় সময় ভোর পাঁচটা নাগাদ কিয়েভ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা ছিল ইউক্রেনের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ বিমানের। কিন্তু বিমানটি এক ঘণ্টারও বেশি দেরিতে অর্থাৎ ৬টা ১০ মিনিট নাগাদ গন্তেব্যের উদ্দেশে রওনা দেয়। ফ্লাইট পিএস৭৫২ টেক অফের দু’মিনিটের মধ্যে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপরই বিমানবন্দর থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে শাহরিয়ার এলাকায় বিমানটি ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া যায়। ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ-এর তরফে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে আগুন ধরে যাওয়া অবস্থায় বিমানটিকে ভেঙে পড়তে দেখা গিয়েছে। বিমানটি ভেঙে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও দমকলকর্মীরা। উদ্ধারকার্যে সেনাকেও নামানো হয়। ভেঙে পড়ার পর বিমানটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে একের পর দগ্ধ দেহ বের করে নিয়ে আসেন উদ্ধারকারী দলের কর্মীরা। তেহরানের ডেপুটি গভর্নর মহম্মদ তাঘিজাদে বলেন, বিমানটিতে মোট ১৬৭ জন যাত্রী ছাড়াও ৯ জন ইউক্রেনের বিমানকর্মী ছিলেন। তাঁদের সবারই মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ৭০ জন পুরুষ, ৮১ জন মহিলা ও ১৫ জন শিশু রয়েছেন। ইউক্রেনের বিদেশ মন্ত্রকের তরফেও বিমানের সব যাত্রীর মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লোদিমির জেলেনিস্কি মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি ইরাকে মার্কিন সেনাদের উপর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে বিমান দুর্ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন। মার্কিন প্রশাসন ইরাক, ইরান এবং উপসাগরীয় দেশগুলির উপর দিয়ে তাদের দেশের বিমান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এয়ার ফ্রান্স একই কথা ঘোষণা করেছে। বোয়িংয়ের তরফে ট্যুইটারে লেখা হয়েছে, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
ফিনল্যান্ডের উড়ান বিশেষজ্ঞ স্টিফেন রাইট অবশ্য ইরানের ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিমানটি ধ্বংস হতে পারে বলে ইঙ্গিত করেছেন। যদিও তাঁর দাবির স্বপক্ষে সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য-প্রমাণ অবশ্য তিনি দিতে পারেননি।
তিনি বলেন, বিমানটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হতে পারে বলে দুর্ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ ইঙ্গিত করছে। কেননা বিমানটি ওড়ার পর ডানদিকে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বিমানটি ভেঙে পড়ার পিছনে যা অন্যতম কারণ। এদিকে দুর্ঘটনাগ্রস্ত ইউক্রেনের বিমানের ব্ল্যাক বক্স খুঁজে পেয়েছেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। ইরানের অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের মুখপাত্র রেজা জাফরজাদা বলেন, ভেঙে পড়া ইউক্রেনের বিমানের দু’টি ব্ল্যাক বক্স খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। তবে ওই ব্ল্যাক বক্স দু’টি তদন্তের জন্য আমেরিকার (বোয়িং) হাতে তুলে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনেই বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ইরানের অসামরিক বিমান পরিবহণ সংস্থা ও ইউক্রেন যৌথভাবে দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। উল্লেখ্য, ইউক্রেনের যে বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়েছে সেটি দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট। এছাড়া মাঝারি দুরত্বের ফ্লাইট হল বোয়িং ৭৩৭-৮০০। ১৯৯০ সালের শেষের দিকে এই বিমান চালু হয়। ২০১৬ সালে দুবাই থেকে রাশিয়ার রোস্তভ-অন-ডন বিমানবন্দরে নামার সময় বোয়িং ৭৩৭-৮০০ বিমান ভেঙে পড়লে ৬২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০১০ সালের মে মাসে দুবাই থেকে মেঙ্গালুরুতে নামার সময় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের আরও একটি ৭৩৭-৮০০ বিমান ভেঙে পড়েছিল। ওই দুর্ঘটনায় ১৫০ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল।