বিদ্যার্থীদের অধিক পরিশ্রম করতে হবে। অন্যথায় পরীক্ষার ফল ভালো হবে না। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ভালো ... বিশদ
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন মোটেও অপরিচিত নন বাঙালির কাছে। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে বাণিজ্য সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। অনেকক্ষণ তিনি রাজ্যের সচিবালয় নবান্নে কাটিয়ে যান। তাঁর ভারতীয় যোগও রয়েছে। তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী মারিনা হুইলার আধা ভারতীয়। বরিসের ক্ষমতায় ফিরে আসার পাশাপাশি এবারে ব্রিটেনে ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রার্থীদের নজরকাড়া ফল নিয়েও জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। কনজারভেটিভ এবং লেবার উভয় দলের সব ভারতীয় বংশোদ্ভূত এমপিই তাঁদের আসন ধরে রাখতে পেরেছেন। এছাড়াও, সংসদে আসতে চলেছেন আরও চার নতুন ভারতীয় বংশোদ্ভূত। এই চারজনকে নিয়েও আলোচনা সর্বত্র। স্টকপোর্ট থেকে লেবার পার্টির টিকিটে জয়ী হয়েছেন নভেন্দু মিশ্র। কনজারভেটিভ পার্টির হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব হার্টফোর্ডসায়ার থেকে জয়ী হয়েছেন গগন মাহিন্দ্রা এবং গোয়ার বংশোদ্ভূত ক্লেয়ার কুটিনহো জয়ী হয়েছেন পূর্ব সারে থেকে। ট্যুইকেনহাম থেকে জয়ী হয়েছেন মুনিরা উইলসন। তাঁদের নিয়ে ব্রিটিশ সংসদে ভারতীয় বংশোদ্ভূত নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির সংখ্যা দাঁড়াল ১৫।
এবারের নির্বাচনের প্রধান ইস্যু ছিল ব্রেক্সিট। অনেকে এই নির্বাচনকে ব্রেক্সিট নির্বাচন বলেও অভিহিত করেছেন। সেই ব্রেক্সিটের পক্ষে প্রচার করে জয় পেয়েছেন কনজারভেটিভ পার্টির দুই প্রার্থী গগন মাহিন্দ্রা এবং ক্লেয়ার কুটিনহো। গোয়ার বংশোদ্ভূত ক্লেয়ার নির্বাচনী প্রচারে বলেছিলেন, ‘ব্রেক্সিট কার্যকর করার সময় হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল এবং পুলিসি ব্যবস্থায় বিরাট বিনিয়োগ করা হবে। রাস্তাঘাট হবে আরও নিরাপদ।’ ফলাফল বলছে, ক্লেয়ারের এই প্রচারে কাজ হয়েছে। সারে ইস্ট কেন্দ্র থেকে ২৪ হাজারেরও বেশি ভোটে তিনি জিতেছেন। অপরদিকে, হার্ডফোর্ডশায়ার কেন্দ্র থেকে ১৪ হাজার ৪০৮ ভোটে জিতেছেন মাহিন্দ্রা।
এবারের নির্বাচনের ফলাফল নানাদিক দিয়েই গুরুত্বপূর্ণ। ব্রেক্সিটের আবহে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও, ভারতীয়দের নজরে ছিল লেবার পার্টি। কাশ্মীর নিয়ে জরুরি প্রস্তাব উত্থাপনের পাশাপাশি উপত্যকায় আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের দাবি জানায় লেবাররা। কাশ্মীর নিয়ে নিজেদের অবস্থানের সপক্ষে তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় জোরদার প্রচারও করেছিল। তবে খুব একটা ফায়দা তুলতে পারেনি। এবারের নির্বাচনে বেশ কয়েকটি চিরাচরিত আসন লেবারদের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে টোরিরা। ওয়ার্কিংটন, ডার্লিংটন, বিশপ, অকল্যান্ড, রেডকার, বার্নলে লেবারদের থেকে কনজারভেটিভদের ঝুলিতে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, ১৫ শতাংশ ভোটও খুইয়েছে লেবাররা। এই ভোট স্যুইং করে কনজারভেটিভ পার্টির পক্ষে গিয়েছে। স্কটল্যান্ডে অবশ্য প্রায় সব আসন দখল করেছে স্থানীয় স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি (এসএনপি)। এই অবস্থায় ব্রিটেনের থেকে স্বাধীনতার দাবিতে দ্বিতীয় গণভোটে যেতে পারে এই দল। এসএনপি নেত্রী নিকোলা স্টার্জন ইউরোপীয় ইউনিয়নে থেকে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।
এবারের নির্বাচনের ফলাফলে সবচেয়ে সঙ্কটে পড়েছে লেবার পার্টি। ১৯৩৫ সালের পর এবারই তাদের সবচেয়ে খারাপ ফল হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, ভোটারদের মন বুঝতে ভুল করেছিলেন লেবার নেতারা। সারা দেশেই এবার ব্রেক্সিটের পক্ষে হাওয়া ছিল। কিন্তু লেবার নেতারা এমনভাবে প্রচার করেছিলেন, যাতে সকলের মনে হয়েছিল যে তারা ইইউতে থেকে যাওয়ার পক্ষে। এই প্রচারের খেসারত দিতে হয়েছে লেবার পার্টিকে। প্রায় পুরো উত্তর ইংল্যান্ড লেবারদের হাতছাড়া হয়েছে। ভবিষ্যতের দেওয়াল লিখন পড়ে পরাজয় মেনে নিয়েছেন লেবার নেতা জেরেমি করবিন। তাঁর কথায়, ‘এই ফল সময়ের প্রতিচ্ছবি।’