মাঝে মধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযো ... বিশদ
গত ৫ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের উপর থেকে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার। তারপর থেকেই কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছেন জয়পাল। সেইমতো ১০ সেপ্টেম্বর সহকর্মী তথা মাসাচুসেটসটের এমপি জেমস ম্যাকগোভার্নকে নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওকে একটি চিঠি দেন তিনি। সেখানে তাঁকে জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে ভারতের উপর চাপ বাড়ানোর আর্জি জানান জয়পাল। তারপর প্রধানমন্ত্রী মোদির মার্কিন সফরের আগে আরও ১০ জন এমপিকে নিয়ে বিবৃতি জারি করেন তিনি। কাশ্মীরের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানান ডেমোক্র্যাট এমপি।
এই ঘটনার পর জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে তাঁর কেন্দ্র থেকে কী রিপোর্ট পেয়েছেন তা জানতে জয়পালের সঙ্গে দেখা করে ভারতীয় মিশন। সেখানে বলে তিনি অভিযোগ করেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা কাশ্মীরিরা তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। ভারতীয় প্রতিনিধিদল জয়পালকে ওই সমস্ত কাশ্মীরিদের নাম জানাতে বললে, তিনি তা দিতে পারেননি। এরপরেই প্রতিনিধিদল বুঝতে পারে, আসলে কাশ্মীরি মুখোশ পরা পাকিস্তানিদের কথা বোঝাতে চাইছেন জয়পাল। এমনকী, গত ২২ অক্টোবরের মানবাধিকার নিয়ে কংগ্রেসের এক আলোচনায় মোদি সরকারের বিরুদ্ধে কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন তিনি। তখনই জয়পাল ঘোষণা করেছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরে যোগাযোগের উপর নিষেধাজ্ঞা এবং গণ ধরপাকড়ের বিরুদ্ধে কংগ্রেসে প্রস্তাব আনবেন।
সেইমতো শুক্রবার রিপাবলিকান বন্ধু স্টিভ ওয়াটকিন্সকে নিয়ে মার্কিন সংসদে প্রস্তাব আনেন জয়পাল। পরে শনিবার মধ্যরাতে ট্যুইট করে তিনি বলেন, ‘জম্মু ও কাশ্মীরে ভারত সরকারের চাপানো যোগাযোগের উপর নিষেধাজ্ঞা ও গণ ধরপাকড় দ্রুত বন্ধ করতে এবং সমস্ত নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতা বজায় রাখতে রিপাবলিকান ওয়াটকিন্সকে নিয়ে গতকাল হাউসে দ্বিদলীয় প্রস্তাব এনেছি।’ যদিও, জয়পালের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে সেখানকার ভারতীয় সম্প্রদায়। নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা তথা ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিশিষ্ট আইনজীবী রবি বাটরা জয়পালকে ‘নীতি-জ্ঞানহীন, হিন্দুবিরোধী, সন্ত্রাসের মদতদাতা’ বলে আক্রমণ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘প্রমীলা জয়পাল ও আইহান ওমরের মতো রাজনৈতিক সুবিধাবাদীদের ধিক্কার জানাই।’
এর আগে অক্টোবরেও জয়পালকে এ ধরনের প্রস্তাব আনা থেকে দূরে থাকার আবেদন জানিয়েছিল ভারতীয় সম্প্রদায়ের প্রায় ৮০ জনের এক প্রতিনিধিদল। এমনকী, কাশ্মীরি হিন্দুদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে জয়পালের সিটল অফিসে মৌন মিছিল করেছিলেন ভারতীয়-মার্কিনরা। কাশ্মীর নিয়ে প্রস্তাব আনা থেকে বিরত থাকতে জয়পালকে কয়েক হাজার চিঠি ও ইমেল পাঠিয়েছিলেন তাঁরা। এছাড়া, জয়পালের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করে সিটলের স্থানীয় নির্বাচনে তাঁর মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে তাঁকে পরাস্ত করেছিলেন ভারতীয়-মার্কিনরা। এখানেই থেমে না থেকে কাশ্মীর নিয়ে ভারতের অবস্থানের কথা জানিয়ে জয়পালের সঙ্গে দেখা করেছিলেন আমেরিকায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, আমেরিকায় ভারতীয় মিশনের ডেপুটি অমিত কুমার এবং সান ফ্রান্সিসকোতে নিযুক্ত ভারতের কনসাল জেনারেল সঞ্জয় পাণ্ডা। কিন্তু, ভারতের তথ্য সত্ত্বেও নিজের অবস্থানেই অনড় রইলেন জয়পাল।