গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
পুলিস জানিয়েছে, শুক্রবার কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্দি পুর্নবাসন সংক্রান্ত এক সম্মেলনে যোগ দিয়েছিল উসমান খান। যদিও সম্মেলন নয়, সেটিকে সামনে রেখে জঙ্গি হামলা চালানোই ছিল তার মূল উদ্দেশ্য। পরিকল্পনামাফিক কোমরে ভুয়ো বিস্ফোরকের বেল্ট বেঁধে সম্মেলনে ঢুকে প্রথমে ঐতিহাসিক ফিসমঙ্গার’স হল উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় উসমান। আত্মঘাতী হানার আশঙ্কায় ফিসমঙ্গার’স হলে শুরু হয়ে যায় হুড়োহুড়ি। তার মধ্যেই বেশ কয়েকজনের উপর ছুরি নিয়ে হামলা চালিয়ে লন্ডন ব্রিজে এসে পথচারীদের আক্রমণ করে। হামলায় প্রাণ হারান দু’জন। তাকে আটকাতে গিয়ে ছুরির আঘাতে গুরুতর জখম হন আরও কয়েকজন। আত্মঘাতী বিস্ফোরণের আশঙ্কায় গুলি চালিয়ে উসমানকে নিকেশ করে পুলিস। এই ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই কোবরা ইমার্জেন্সি কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন বরিস জনসন। তিনি জানিয়েছেন, জঙ্গি হামলায় জড়িতরা কেউ রেহাই পাবে না। প্রত্যেককে খুঁজে বার করে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে। পাশাপাশি, পথচারীদের সাহসের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।
লন্ডন ব্রিজ হামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের অ্যাসিস্টেন্ট কমিশনার নীল বসু বলেন, ‘উসমান কীভাবে হামলার ছক কষেছিল, তা অনেকটাই স্পষ্ট। আমরা তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছি। এই হামলায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার কাজ চলছে।’ এক পুলিসকর্তা জানিয়েছেন, তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই স্ট্যাফোর্ডের একটি বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। অনুমান, এই বাড়িতেই হামলার নীল নকশা তৈরি করা হয়েছিল।
সূত্রের খবর, ছোটবেলায় স্কুলছুট উসমান খান মায়ের অসুস্থতার জন্য দীর্ঘদিন পাকিস্তানে কাটিয়েছিল। তখনই জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে নাশকতামূলক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে সে। পরে ব্রিটেনে ফিরে এলেও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে গিয়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল উসমানের। কিন্তু তার আগেই লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে হামলার ছক কষার অভিযোগে ধৃত উসমানকে ২০১২ সালে কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় আদালত। বছরখানেক আগে জেল থেকে ছাড়া পায় সে। শুক্রবারের হামলার পর এই ধরনের একজন জঙ্গিকে কীভাবে প্যারোলে ছাড়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এপ্রসঙ্গে বরিস জনসন বলেন, ‘এই ধরনের অপরাধীরা যেভাবে জেল থেকে তাড়াতাড়ি ছাড়া পেয়ে যায়, আমি দীর্ঘদিন ধরেই তার বিরোধী। আমাদের এই অভ্যাস বদল করতে হবে।’ লন্ডনের মেয়র সাদিক খান জানিয়েছেন, নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই শহরজুড়ে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সামনেই নির্বাচন। তার আগে এই হামলার প্রভাব যাতে কোনওভাবেই ভোটারদের মধ্যে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে তৎপর হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। শনিবার নিজের যাবতীয় প্রচারসূচি বাতিল করে দেন বরিস জনসন। অন্যদিকে, লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বলেন, ‘সন্ত্রাসী হামলা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারের পথে বাধা হতে পারবে না।’ উসমান খান। - ফাইল চিত্র