কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
এশিয়ান-ইন্ডিয়া, ইস্ট এশিয়া এবং আরসিইপি সম্মেলনে যোগ দিতে তিনদিনের সফরে শনিবার থাইল্যান্ডে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। রবিবার আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীর সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে থাইল্যান্ডে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। সেখানে হাজির ছিলেন থাইল্যান্ডের এক ঝাঁক প্রভাবশালী বিনিয়োগকারী। সেই মঞ্চ থেকেই পরিবর্তিত ভারতের ছবি তুলে ধরেন মোদি। তিনি বলেন, ‘আজকের ভারতে পরিশ্রমী করদাতাদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। যে ক্ষেত্রটিতে লক্ষ্যণীয় কাজ হয়েছে সেটি হল, কর। সবথেকে করবান্ধব দেশগুলির মধ্যে অন্যতম হল ভারত। আমরা তাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে বদ্ধ পরিকর।’ এখন ভারতে যে ‘ফেসলেস ট্যাক্স অ্যাসেমেন্ট’ চালু হয়েছে, তাতে পক্ষপাতিত্ব ও হয়রানির কোনও উপায় নেই বলে জানিয়েছেন মোদি।
এরপরেই প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ, সহজ জীবনযাত্রা, ইজ অব ডুয়িং বিজনেস-এ ভারতের সাফল্যের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে উচ্চ কর, লাল ফিতের ফাঁস, দুর্নীতি, ক্রোনি অর্থনীতির অবসান হয়েছে বলে জানান তিনি। মোদির কথায়, ‘এই সমস্ত কিছুই ভারতকে বিশ্বের সবথেকে আকর্ষণীয় বিনিয়োগ স্থলে পরিণত করেছে। গত পাঁচ বছরে ভারতে ২ হাজার ৮৬০ কোটি ডলার প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে। যা গত ২০ বছরে ভারতের পাওয়া বিদেশি বিনিয়োগের অর্ধেক। ২০১৪ সালে যখন আমি মসনদে বসি, তখন ভারতের জিডিপি ছিল ২ লক্ষ কোটি ডলার। গত ৬৫ বছরে ২ লক্ষ কোটি ডলার। কিন্তু, গত পাঁচ বছরে তা বাড়িয়ে আমরা প্রায় ৩ লক্ষ কোটি ডলারে নিয়ে গিয়েছি।’
তাঁর শাসনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য এসেছে বলেও দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে ডিরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার (ডিবিটি) প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন তিনি। মোদি বলেন, ‘ভারতে গতে বাঁধা ধারায় কাজ এবং আমলাতন্ত্রের অবসান হয়েছে। আপনারা শুনলে অবাক হবেন, বহু বছর ধরে গরিবদের উন্নয়নে খরচ করা টাকা তাঁদের কাছেই পৌঁছত না। আমাদের সরকার সেই সংস্কৃতির অবসান ঘটিয়েছে।’ তাঁর ২০ মিনিটের ভাষণে ভারতের প্রশিক্ষিত ও বুদ্ধিমান কর্মীর প্রাচুর্য নিয়ে গর্ব প্রকাশ করেন মোদি। এরপরেই লগ্নিকারীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর বার্তা, ‘বিনিয়োগ ও সহজে ব্যবসার জন্য ভারতে আসুন। অভিনবত্ব ও স্টার্ট আপের জন্য ভারতে আসুন। সেরা পর্যটন স্থল ও উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য ভারতে আসুন। আপনাদের জন্য হাত বাড়িয়ে রয়েছে ভারত।’
এছাড়া থাইল্যান্ডের সঙ্গে পারস্পরিক উন্নতিতে ‘অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি’ নিয়েও মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। থাইল্যান্ডের পশ্চিম উপকূলের সঙ্গে ভারতের পূর্ব উপকূলের সরাসরি যোগাযোগ আর্থিক অংশীদারিত্ব বাড়াবে।’ এদিন এশিয়ান-ইন্ডিয়া সম্মেলনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি নিয়ে সরব হন তিনি। সেই বৈঠকের ফাঁকে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার লক্ষে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রযূত চ্যান-ও-চায়ের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন মোদি। এছাড়া সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রপন্থা দমনে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডোর সঙ্গেও এদিন বৈঠক করেন তিনি। ঠিক হয়েছে, সন্ত্রাস দমনে একজোটে কাজ করবে দুই দেশ। প্রসঙ্গত, বাণিজ্য ও লগ্নি সংক্রান্ত বিশ্বের প্রভাবশালী গোষ্ঠীগুলির মধ্যে অন্যতম হল ১০ সদস্য দেশের ‘এশিয়ান’।