বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
গতকাল ১৯৩ সদস্য বিশিষ্ট রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভায় কুলভূষণ মামলা সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট পেশ করা হয়। ওই রিপোর্ট তুলে ধরে ইউসুফ বলেন, ‘কুলভূষণ মামলায় ২০১৭ সালে একটি রায় ঘোষণা করা হয়। সেই রায় পর্যালোচনা করে দেখা গিয়েছে, ভিয়েনা সম্মেলনের ৩৬ নম্বর ধারাকে লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান।’ ইউসুফের এই মন্তব্যে কার্যত জয় দেখছে নয়াদিল্লি। কেননা কুলভূষণ মামলায় ‘কনস্যুলার অ্যাকসেস’ নিয়ে বারবারই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তোপ দেগে এসেছে ভারত। ভিয়েনা সম্মেলনকে অবজ্ঞা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ ছিল নয়াদিল্লির। এদিন ভারতের সেই অবস্থানকে মান্যতা দিলেন ইউসুফ। যাতে করে কুলভূষণ মামলায় নতুন করে স্নায়ুর চাপ বাড়ল ইসলামাবাদের। এমনটাই মনে করছেন কূটনীতিকদের একটা বড় অংশ। সেই সঙ্গে ইউসুফ এটাও জানিয়ে দিয়েছেন, এই মামলায় যথাযথ প্রতিকার হওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা।
গুপ্তচর সন্দেহে ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রাক্তন আধিকারিক কুলভূষণ যাদবকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তান। তাঁর বিরুদ্ধে ‘গুপ্তচর বৃত্তি ও সন্ত্রাস চালানোর’ অভিযোগ তোলে ইসলামাবাদ। কুলভূষণের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয় পাকিস্তানের সেনা আদালতে। সেখানে কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে হেগের আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হয় ভারত। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে মামলার শুনানিতে জোর ধাক্কা খায় পাকিস্তান। ভারতের তরফে বলা হয়, কুলভূষণের সঙ্গে কনস্যুলার অ্যাকসেস করতে দিচ্ছে না পাকিস্তান। যা অত্যন্ত অমানবিক এবং ১৯৬৩ সালের ভিয়েনা সম্মেলনের শর্তকে লঙ্ঘন করছে। ভারতের বক্তব্য শোনার পর ইউসুফের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক আদালতের বিশেষ বেঞ্চ এক রায় ঘোষণা করে জানিয়ে দেয়, কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ পুনর্বিবেচনা করতে হবে পাকিস্তানকে। তাঁর সঙ্গে কনস্যুলার অ্যাকসেস করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে পাকিস্তানকে।’
এদিন রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভায় ওই রায়ের বিভিন্ন দিক নিয়ে পর্যালোচনা করেন ইউসুফ। সেখানে কুলভূষণ মামলায় কনস্যুলার অ্যাকসেস নিয়ে পাকিস্তানের আপত্তিকে ভিয়েনা সম্মেলন যে সমর্থন করে না, তাও স্পষ্ট করে দেন তিনি। এই প্রসঙ্গে ২০০৮ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিকেও রায়ের পর্যালোচনার ক্ষেত্রে তুলে ধরেন ইউসুফ। ওই দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে বন্দিদের সঙ্গে কুনস্যুলার অ্যাকসেস নিয়ে দুই দেশই সহমত পোষণ করেছিল। অর্থাৎ, ভিয়েনা কনভেনশন মেনে কনস্যুলার অ্যাকসেস অগ্রাহ্য করতে পারবে না ভারত-পাকিস্তান। ইউসুফ বলেছেন, ‘কুলভূষণ মামলায় ২০০৮ সালের দ্বিপাক্ষিক চুক্তিকেও মান্যতা দেওয়া হয়নি।’ সব দিক বিচার বিবেচনা করেই কুলভূষণের কনস্যুলার অ্যাকসেস পাওয়ার অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়ে দেন ইউসুফ। এরই পাশাপাশি তিনি এদিন জানিয়েছেন, চলতি বছরের ১ আগস্ট লিখিতভাবে রায়কে কার্যকর করা হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক আদালতকে জানিয়েছে পাকিস্তান।