টোকিও ও নয়াদিল্লি, ১৩ অক্টোবর (এপি): জাপানে টাইফুন হাগিবিসের তাণ্ডবে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৬ জন। আহত হয়েছে অন্তত ১০০ জন। নিখোঁজ ১২ জনেরও বেশি। বেসরকারি মতে মৃত ও নিখোঁজের সংখ্যা আরও বেশি। ঝড়ের প্রকোপ কমায় রবিবার থেকে শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ। জাপানের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, দেশজুড়ে ১৪টি নদী প্লাবিত। টামা নদীর জল ঢুকে পড়েছে পার্শ্ববর্তী টোকিও শহরেও। বহু জায়গায় নিজেদের বাড়িতে আটকে পড়েছেন মানুষ। ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও।
এদিন সরকারি মুখপাত্র ইয়োশিহিদে সুগা জানিয়েছেন, পূর্ব জাপানে টাইফুনের জেরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উদ্ধারকাজে নামানো হয়েছে ২৭ হাজার সেনা জওয়ান, অন্যান্য উদ্ধারকারী দল, হেলিকপ্টার ও নৌকা। ভিডিও ফুটেজে বন্যার ভয়াবহ ছবি চোখে পড়েছে। বন্যার জেরে ভূমিধসেরও আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
মুখপাত্র আরও জানিয়েছেন, টাইফুনের তাণ্ডবে বর্তমানে প্রায় ৩ লক্ষ ৭৬ হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। জল পাচ্ছে না ১৪ হাজার বাড়ি। ঝড়-বৃষ্টি কমায় এদিন সকাল থেকে টোকিও এলাকায় ট্রেন পরিষেবা চালু হয়েছে। অন্যান্য জায়গাতেও ট্রেন চলাচল শুরুর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে জাপানে রাগবি বিশ্বকাপ চলছে। টাইফুনের কারণে শনিবারের ম্যাচগুলি বাতিল করা হয়েছিল। এদিনও নামিবিয়া বনাম কানাডার ম্যাচটি বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। উত্তর জাপানের কামাইশিতে ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল। উল্লেখ্য, এর আগে টোকিও অঞ্চলে এমন ভয়াবহ টাইফুন আছড়ে পড়েছিল ১৯৫৮ সালে। যার জেরে মারা গিয়েছিলেন ১,২০০-রও বেশি মানুষ।
জাপানের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘটনায় মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ট্যুইট করে এই কঠিন পরিস্থিতিতে জাপানের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। বর্তমানে জাপানে রয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি দল। সেদেশের সরকার চাইলে নৌবাহিনীর আধিকারিকরা উদ্ধার অভিযানে সাহায্য করতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে বরাবরই নিজের বন্ধু বলে উল্লেখ করেছেন মোদি। তাঁর নেতৃত্বে জাপান এই দুঃসময় শীঘ্র কাটিয়ে উঠতে পারবে বলেও আশাবাদী তিনি। পরে জাপানের অনুরোধে উদ্ধারকাজে সহায়তা শুরু করেছে ভারতীয় নৌবাহিনীর দু’টি যুদ্ধজাহাজ, আইএনএস সহ্যাদ্রি এবং আইএনএস কিলটান।