নিউ ইয়র্ক, ২৮ সেপ্টেম্বর: পাকিস্তানের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য এবার আশার আলো নিয়ে হাজির এক নয়া মুখ। তিনি গুলালাই ইসমাইল। পাকিস্তানের এই মহিলা সমাজকর্মী আমেরিকায় রাজনৈতিক শরণার্থী হওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। শুক্রবার সকালে নিউ ইয়র্কের ব্যস্ত রাস্তায় নেমে পাক সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান তোলেন ৩২ বছর বয়সি গুলালাই। পাকিস্তানের বিভিন্ন পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের উপর কীভাবে অত্যাচার হচ্ছে, তাই-ই তুলে ধরেন তিনি। মাত্র একমাস হল তিনি এই শহরে এসেছেন। কিন্তু তার মধ্যেই তিনি পাকিস্তানের পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের বঞ্চনা নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। শুক্রবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের দপ্তরের সামনে তিনি প্রতিবাদে নামেন। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভায় পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বক্তব্য রাখার সময়েই দপ্তরের বাইরে পাক সরকারের বিরোধিতায় মুখর হন গুলালাই। মোহাজির, পাখতুন, বালোচ, সিন্ধি ইত্যাদি আরও যে সকল সম্প্রদায় পাকিস্তান প্রশাসনের বঞ্চনার শিকার হচ্ছে, তাদের স্বার্থরক্ষার কথাই তুলে ধরেন গুলালাই। তিনি একা নন। রাষ্ট্রসঙ্ঘের বাইরে বহু মানুষকেই প্ল্যাকার্ড হাতে তাঁর সঙ্গে প্রতিবাদ জানাতে দেখা গিয়েছে। গুলালাই বলেন, ‘সন্ত্রাস দমনের নামে পাকিস্তানে নিরপরাধ পাখতুনদের খুন করা হচ্ছে। বহু মানুষকে জেলে ঢুকিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে পাকিস্তানি সেনারা তাঁদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে।’ পাক প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি দাবি তোলেন, পাকিস্তানি সেনার লাগাতার মানবাধিকার লঙ্ঘন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। জেলে জোর করে যাঁদের বন্দি করে রাখা হয়েছে তাঁদের ছেড়ে দিতে হবে। আমরা কিছু বলতে গেলেই আমাদের জঙ্গি আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। খাইবার-পাখতুনওয়া প্রদেশে সেনাবাহিনীর স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করতে হবে।’
দেশদ্রোহিতায় অভিযুক্ত গুলালাই পাকিস্তান থেকে পালিয়ে যান। তবে তাঁর পরিবার এখনও পাকিস্তানেই রয়েছে। এব্যাপারেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। পাকিস্তান থেকে পালাতে যাঁরা তাঁকে সাহায্য করেছিলেন, তাঁদের জন্যও তিনি চিন্তিত। তিনি বলেন, আমি এখনও আমার পরিবার এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের জন্য চিন্তিত। আমার পরিবারকে আমার বিরুদ্ধাচারণ করার জন্য তারা (পাক সেনা) লাগাতার চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও পরিবার আমার সঙ্গেই আছে। এখন তারা (পাক প্রশাসন) আমার বাবা এবং মায়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে।’