বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
শুক্রবার হিউস্টনের উত্তর-পূর্বে সন্দেহভাজন একটি গাড়ি আটকান সন্দীপ। গাড়িটিতে সেই সময় একজন পুরুষ ও একজন মহিলা ছিলেন। এরপর তাদের মধ্যে একজন গাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে ঠাণ্ডা মাথায় ডেপুটি শেরিফের উপর পরপর দু’বার গুলি চালায়। গুরুতর আহত অবস্থায় সন্দীপকে হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। হ্যারিস কাউন্টির শেরিফ গঞ্জালেস এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাতে হচ্ছে যে, আমাদের অত্যন্ত কাছের একজনকে আমরা হারিয়ে ফেলেছি। শোকপ্রকাশ করার মতো আমার কোনও ভাষা নেই। একজন অসাধারণ বাবা, স্বামী, ছেলে, ভাই, বন্ধু এবং অবশ্যই টেক্সাসের একজন শান্তিরক্ষাকারী আধিকারিককে হারালাম।’
মার্কিন মুলুকে ঢালিওয়াল প্রথম পাগড়ি পরে পুলিসে কাজ করার অধিকার অর্জন করেছিলেন। হ্যারিস কাউন্টির পুলিস কমিশনার অ্যাড্রিয়ার গার্সিয়া এব্যাপারে প্রয়োজনীয় অনুমোদন দিয়েছিলেন। সন্দীপের মৃত্যুতে তিনিও গভীর শোকাহত। এব্যাপারে গার্সিয়া বলেন, নিজের ভাই-বোনের মতো করেই সহকর্মীদের সঙ্গে সন্দীপ মেলামেশা করতেন। সবসময় নিজের আগে সম্প্রদায়ের কথা ভাবতেন তিনি। প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড় হার্ভির ধাক্কায় আমেরিকার বেশ কিছু এলাকা তছনছ হয়ে গিয়েছিল। ইউনাইটেড শিখ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হয়ে উপদ্রুত এলাকায় ত্রাণ ও প্রয়োজনীয় পরিষেবা পৌঁছে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন সন্দীপ। শেরিফ ইড গঞ্জালেস একথা জানিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সহকর্মী মহলেও।
সন্দীপের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন হাউস্টনের মেয়র সিলভেস্টার টার্নের এবং টেক্সাসের গর্ভনর গ্রেগ অ্যাবট। গ্রেগ একট বিবৃতি জারি করে বলেন, এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। আইনরক্ষাকারী প্রতিদিন, প্রতিমুহূর্তে কতটা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন, তা ফের একবার স্মরণ করিয়ে দিল সন্দীপের মৃত্যু। পাশাপাশি, যে পুলিস আধিকারিকরা দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছেন, তাঁদেরও প্রশংসা করেছেন তিনি। অন্যদিকে, হাউস্টনের মেয়র ভারতীয় বংশোদ্ভূত শিখ আধিকারিকের ভূয়সি প্রশংসা করেছেন। শুক্রবার রাতে ট্যুইটারে তিনি লেখেন, সন্দীপ ঢালিওয়াল আমাদের সম্প্রদায়ের বৈচিত্র, একাত্মতা এবং যা কিছু ভালো, তার যোগ্য প্রতিনিধি ছিলেন।
এদিকে, বিদ্বেষমূলক কারণে তাঁর উপর হামলা হয়েছিল কিনা, তা স্পষ্ট নয়। তদন্তকারীরা সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছেন। প্রসঙ্গত, ৯/১১-এ জঙ্গি হানার পর থেকে আমেরিকায় পাগড়ি ও বড় দাড়ি রাখা শিখ সম্প্রদায়ের মানুষেরা নানা কারণে বৈষম্যের শিকার হতে শুরু করেন। এরমধ্যে দেশের সংস্কৃতিক বৈচিত্রকে প্রাধান্য দিতে সন্দীপকে পাগড়ি পরতে এবং বড় দাড়ি রাখতে অনুমতি দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে, হ্যারিস কাউন্টির শেরিফ সহ দেশের বিভিন্ন আইনরক্ষাকারী সংস্থা তাদের নিয়মে বদল আনে। প্রচলিত ধারনার বাইরে গিয়ে যোগ্য ও দক্ষ ব্যক্তিরা যাতে চাকরির ক্ষেত্রে বঞ্চিত না হন, তা নিয়ে নীতি প্রণয়ন করা হয়।