নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি, ৮ আগস্ট: দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করা, ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের পর পাকিস্তান সমঝোতা এক্সপ্রেসও বাতিল করে দিল। বন্ধ হচ্ছে ভারতীয় সিনেমার প্রদর্শনও। পাকিস্তানের আকাশসীমা ভারতের জন্য নিষিদ্ধ করার পথে হাঁটার ইঙ্গিতও দিয়েছে ইমরান খানের প্রশাসন। কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের এভাবে একের পর এক সিদ্ধান্তে ভারত ক্ষুব্ধ। আজ ভারতের বিদেশমন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে বলেছে, কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারতের সংবিধানের সার্বভৌমত্ব নিয়ে পাকিস্তানের এধরনের প্রতিক্রিয়া কাম্য নয়। বস্তুত ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক যে যথেষ্ট উত্তেজনাপূর্ণ এরকম বার্তাই পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মহলকে দিতে চাইছে। তাই এভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ছিন্ন করার পথে হাঁটছে পাকিস্তান। ভারতের বিদেশমন্ত্রক বলেছে, পাকিস্তানের সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক। ওই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হোক বলে পাকিস্তানকে বার্তাও দিয়েছে। একইসঙ্গে বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, ভারত সরকার সম্প্রতি সংসদে জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটি উন্নতির জন্যই করা হয়েছে। সুতরাং এটা ভারতের একান্ত সার্বভৌম অধিকার। বিদেশমন্ত্রক বলেছে, জম্মু-কাশ্মীরের উন্নতির জন্য কোনও প্রয়াস নেওয়া হলেই পাকিস্তান সেটিকে সম্পূর্ণ নেতিবাচকভাবেই প্রচার করবে। এদিকে ভারত আজ যখন পাকিস্তানের কাছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে পুনরায় স্বাভাবিকতা বজায় রাখার দাবি তুলেছে, তখন পাকিস্তান আরও কঠোর মনোভাব দেখিয়ে সমঝোতা এক্সপ্রেসও একতরফা স্থগিত করে দিয়েছে।
আজ লাহোর থেকে আসা সমঝোতা এক্সপ্রেস ওয়াঘা সীমান্তে এসেই দাঁড়িয়ে যায়। পাকিস্তানের চালক, গার্ডের পক্ষ থেকে বার্তা দেওয়া হয় তাঁরা ভারতের অন্দরে ট্রেন নিয়ে যাবেন না। ফলে সমঝোতায় চেপে আগত যাত্রীদের নিয়ে ট্রেন আটকে পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এই সংবাদ পেয়েই রেলমন্ত্রক সক্রিয় হয়ে ওঠে। পাকিস্তানকে বার্তা দেয় ভারতীয় চালক, কর্মীরা গিয়ে ট্রেন নিয়ে আসবে। সমঝোতা এক্সপ্রেসকে সীমান্ত পেরিয়ে নিয়ে আসা হয় আটারিতে। কিন্তু আবার কবে সমঝোতা চলবে তা অনিশ্চিত।
এদিকে আজ বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ঈদের আগে কাশ্মীরের পরিস্থিতি কী স্বাভাবিক হবে? আপাতত এটাই সবথেকে বড় চর্চা। আজ দিল্লি থেকে শ্রীনগরে যাওয়া রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদকে শ্রীনগর এয়ারপোর্টেই আটকে দেওয়া হয়। শহরে ঢুকতে না দিয়ে তাঁকে পুনরায় দিল্লিতে ফেরত পাঠানো হয়। গুলাম নবি আজাদ কটাক্ষ করে বলেন, মোদি সরকার কাশ্মীরের এমন ‘উন্নয়ন’ করেছে যে ভারতের কেউ সেখানে ঢুকতে পারছে না। অসহায় কাশ্মীরবাসী বেরোতেও পারছে না পথে।