বিদ্যার্থীরা শুভ ফল লাভ করবে। মাঝে মাঝে হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ক্ষতি হতে পারে। নতুন ... বিশদ
সোহমের বাবা-মা কলকাতা থেকে ব্রিটেনে এসেছিলেন। স্টকপোর্টের কাছে একটি গ্রামে বেড়ে উঠেছেন তিনি। গ্রামে তাঁরাই ছিলেন একমাত্র প্রবাসী পরিবার। সোহমের বাবা ছিলেন একজন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, মা একজন সেক্রেটারি। আর পাঁচটা প্রবাসী এশীয় পরিবারের মতেই, সোহমের বাবা-মাও ছেলের জন্য মূলস্রোতের কেরিয়ার চেয়েছিলেন। তবে ছোটবেলা থেকেই নিজের লেখালিখি, হাস্যকৌতুক এবং র্যা পসঙ্গীতের সৃজনশীল কাজে হাত পাকিয়েছেন তিনি।
মনোরোগবিদ্যা নিয়ে পড়ার সময় থেকে ফরেন্সিক মনোরোগবিদ্যায় আগ্রহী হয়ে ওঠেন সোহম। ‘বর্তমান’কে তিনি জানিয়েছেন, ‘জুনিয়র ডাক্তার থাকার সময় আপনাকে মনোরোগবিদ্যার বিভিন্ন ধরন নিয়ে ছ’মাসের অভিজ্ঞতা নিতে হয়। আমি ফরেন্সিক সাইকিয়াট্রি নিয়ে ছ’মাসের কোর্স করি এবং রোগীদের বলা গল্পগুলি শুনে মুগ্ধ হয়ে যাই। প্রত্যেক রোগী খুন-জখমের মতো ভয়ঙ্কর অপরাধমূলক কাজ করেছেন এবং প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই কোনও না কোনও কারণ ছিল। এদের মধ্যে অধিকাংশই ছোটবেলা থেকে অত্যাচার বা মানসিক, যৌন বা মাদকাসক্তির মতো সমস্যার শিকার। কিন্তু এরা বিপজ্জনক বলেই এদের চিকিৎসাপদ্ধতিও জটিল। ফরেন্সিক সাইকিয়াট্রি অল্প সংখ্যক রোগীকে নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে পর্যবেক্ষণ করে। এটা অনেক বিশদ পদ্ধতি।’
পেশা হিসেবে ফরেন্সিক সাইকিয়াট্রি অত্যন্ত রোমাঞ্চকর। কিন্তু মানুষ হিসেবে এক্ষেত্রে নৈতিক এবং আইনি ভারসাম্য রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। ডাক্তার হিসেবে বিষয়টিকে কীভাবে দেখেন তিনি? সোহম হিপহপ মিউজিক, কমেডি নাইটস ভালোবাসেন। কাজ বাড়ি নিয়ে যান না। বাড়িতে স্ত্রী ও দুই সন্তানের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসেন। তাঁর সাফ জবাব, ‘আমি মনে করি একজন ভালো ফরেন্সিক সাইকিয়াট্রিস্ট হিসেবে আপনাকে একেবারেই বস্তুনিষ্ঠ এবং নিরপেক্ষ হতে হবে। আপনার নৈতিক চিন্তাধারা এবং ভাবভঙ্গি কোনওভাবেই এর মধ্যে আসতে পারবে না। আপনি শুধু বন্দিদের মানসিক রোগ সম্পর্কে মন্তব্য করবেন। আমি এটা কঠিন মনে করি না। তবে আমার সহকর্মীরা বিষয়টিকে বেশ শক্ত বলেই ভাবেন।
নিজের কাজের পদ্ধতি নিয়েও যথেষ্ট খোলামেলা সোহম। তাঁর কথায়, ‘আমি সাক্ষীদের জবানবন্দি, মামলা নথি, সিসিটিভি ফুটেজ, অভিযুক্তদের পুরনো মেডিক্যাল অতীত দেখি এবং তার উপর নিজের মতামত দিই। অনেক সময়ই এমন কিছু রোগী দেখি যারা মনোরোগী হওয়ার ভান করেন। সেক্ষেত্রে সমস্ত প্রমাণ আমাদের খতিয়ে দেখতে হয়। বন্দি একজন স্কিৎজোফ্রেনিক কি না তাও দেখা দরকার।’
তবে, এসবের বাইরে এখন নিজের উপন্যাস নিয়ে আশাবাদী সোহম। উপন্যাসে সাইকিয়াটিক ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা নিজের বোনকে খুন করা ১৮ বছরের একজন মেয়ের জীবন দেখানো হবে। এরকম একজন রোগীর চিকিৎসা করেছিলেন তিনি। এবছরের শেষেই উপন্যাসটি প্রকাশিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন ডাঃ সোহম দাস।