জেনিভা, ১১ মার্চ: জঙ্গিদের রক্ষা করাই মন্ত্র পাকিস্তানের। আর তার জন্য যদি বিশ্বযুদ্ধের মতো পরিস্থিতিও তৈরি হয়, তাতেও আপত্তি নেই। রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের বৈঠকে এমনই রিপোর্ট দিলেন ইউরোপিয়ান ফাউন্ডেশন ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের গবেষক ইয়োনা বারাকোভা। জঙ্গিদের রক্ষা করতে পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহারেও যে পাকিস্তান পিছপা হবে না, তাও রিপোর্টে স্পষ্ট করেছেন বারাকোভা।
পাকিস্তানের মাটি, জঙ্গিদের বিশ্বস্ত ঘাঁটি। দীর্ঘদিন ধরেই এই বক্তব্য তুলে ধরছে নয়াদিল্লি। ভারতের এই দাবিকে মান্যতা দিয়েছে আমেরিকা থেকে শুরু করে ইউরোপ এমনকী ইরান-আফগানিস্তানের মতো দেশও। এবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন অনুমোদিত বিশ্বের প্রথম সারির গবেষণা সংস্থার রিপোর্টেও পাকিস্তানের এই জঙ্গি-যোগের কথা তুলে ধরা হল। গবেষক ইয়োনা বারাকোভা তাঁর রিপোর্টে লিখেছেন, পাকিস্তান দ্বিধাহীনভাবে সন্ত্রাস রপ্তানি করে। এবং ভারত, আফগানিস্তানের মতো প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে ছায়া যুদ্ধ চালাতে জঙ্গিদের ব্যবহার করে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক পুলওয়ামা হামলা ও ভারতের এয়ার স্ট্রাইকের বদলায় পাক বিমান বাহিনীর ভারতে বোমাবর্ষণের উল্লেখ করে রিপোর্টে বারাকোভা লিখেছেন, পুলওয়ামা হামলায় ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। আর ওই ঘটনার পিছনে হাত রয়েছে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জয়েশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি সংগঠনের। বালাকোট স্ট্রাইকের বদলায় পাকিস্তানের আকাশপথে বোমাবর্ষণের ঘটনা একটাই কুৎসিত সত্য সামনে নিয়ে আসছে। তা হল, শুধুমাত্র তাদের মদতপুষ্ট জঙ্গিদের আড়াল করতে ওই দেশ সমগ্র বিশ্বকে যুদ্ধেও জড়িয়ে ফেলতে পারে। এমনকী পারমাণবিক অস্ত্রের মতো সমরাস্ত্রের ব্যবহারেও তারা পিছপা হবে না। এরপরেই তিনি লিখেছেন, এই বেপরোয়া মনোভাব আমাদের সবাইকেই সন্ত্রস্ত্র করছে। বারাকোভা তাঁর রিপোর্টে লিখেছেন, রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ জঙ্গি সংগঠন ও ব্যক্তি মিলিয়ে পাকিস্তানের ১৩৯ জনকে জঙ্গি তালিকাভুক্ত করেছে। এদের মধ্যে রয়েছে জয়েশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তোইবা, হাক্কানি নেটওয়ার্ক, জামাত-উদ-দাওয়ার মতো সংগঠন। প্রত্যেকটি সংগঠনই পাকিস্তানকে কেন্দ্র করে কাজ করে এবং রাষ্ট্রীয় মদত ও সুরক্ষা পেয়ে থাকে।
পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির বিবিসিকে দেওয়া সাম্প্রতিক একটি সাক্ষাৎকারের কথাও রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন বারাকোভা। সেই সাক্ষাৎকারে কুরেশি জয়েশের সঙ্গে পাক সরকারের যোগাযোগ থাকার কথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন। বারাকোভা লিখেছেন, এই ঘটনাই সন্ত্রাস নিয়ে পাকিস্তানের দ্বিচারিতা স্পষ্ট করেছে। রিপোর্টে তিনি লিখেছেন, সমগ্র বিশ্বে পাকিস্তানই একমাত্র রাষ্ট্র যারা সন্ত্রাসবাদীদের রক্ষা করতে পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার করতেও তৈরি। এরপরেও পাকিস্তান রাষ্ট্রসঙ্ঘের এই মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য কীভাবে থাকে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ওই গবেষক।