কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
শুক্রবার রাতেই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত কামরাগুলিতে জোরকদমে উদ্ধারকাজ শুরু হয়। কাজ চালানোর মতো আলোর ব্যবস্থা হলেও বিস্তীর্ণ এলাকার জন্য তা মোটেও পর্যাপ্ত ছিল না। তাই ছিটকে যাওয়া বহু কামরার ধারেকাছেই পৌঁছতে পারেননি উদ্ধারকারীরা। ভোরের আলোয় স্পষ্ট হয় ঘটনাস্থলের লণ্ডভণ্ড চেহারা। দেখা যায়, লাইন থেকে ৫০-১০০ মিটার দূরে ছিটকে গিয়েছে কয়েকটি কামরা। কয়েকটি বগি এমনভাবে উল্টেছে যে সেগুলির চাকা আকাশের দিকে হয়ে গিয়েছে। যত্রতত্র পড়ে রয়েছে মানুষের দেহাংশ, ব্যাগ, মানিব্যাগ, জুতো, মোবাইল ফোন সহ নানা ব্যবহার্য সামগ্রী।
সকাল থেকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারে নামে সেনা, এনডিআরএফ, বিপর্যয় মোকাবিলা দলগুলি। গ্যাস কাটার দিয়ে দুমড়ে যাওয়া কামরা কেটে পর পর নিথর দেহ বার করে আনা হয়। কাজে লাগানো হয় পে লোডার, ক্রেন। যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেসের দু’টি কামরা থেকে দেহ উদ্ধার করতে ব্যাপক বেগ পেতে হয়। রাতে বোঝাই যায়নি যে রেললাইন থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে ছিটকে গিয়েছে যশবন্তপুর-হাওড়া ট্রেনের দু’টি বগি। রেল সূত্রে খবর, মৃত ও জখম যাত্রীদের পরিবারের সদস্যদের জন্য শনিবার বিকেলে হাওড়া থেকে বালেশ্বর পর্যন্ত একটি স্পেশাল ট্রেন দেওয়া হয়েছিল। বিকেল ৪টে ১০ মিনিটে ২২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে তা রওনা দেয়। উপচে পড়া ভিড় থাকলেও ট্রেনে পরিবারের সদস্যরা কেউই প্রায় ছিলেন না। সকলেই সাধারণ যাত্রী। অনেকে টিকিট না কেটে উঠে পড়েন। আরও জানা গিয়েছে, উদ্ধারকাজ চলবে আজ রবিবারও। দেহ উদ্ধারের পাশাপাশি কংক্রিটের স্লিপার, ওভারহেডের তার, বৈদ্যুতিক খুঁটি মেরামতির কাজ শুরু করেছে রেল। যত দ্রুত সম্ভব ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করতে তত্পর তারা।
সাদা কাপড়ে মোড়া লাশগুলি লরিতে তুলে পাঠিয়ে দেওয়া হয় নিকটবর্তী বাহানাগা স্কুলে। সেখানে শনাক্তকরণের পর দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। সেই স্কুলের বাইরে বসে অঝোরে কাঁদছিলেন ওড়িশার জাজপুরের সরস্বতী সাউ। তাঁর স্বামী শিবশঙ্কর সাউ ছিলেন ‘অভিশপ্ত’ করমণ্ডলে। স্বামীর খোঁজে রাত থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে হন্যে হয়ে ঘুরেছেন। কোথাও তাঁর হদিশ না পেয়ে শনিবার সকালে ছুটে আসেন স্কুলের ‘লাশকাটা ঘরে’। সেখানেই খুঁজে পান স্বামীকে। কিন্তু তাঁর নিশ্চল দেহের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারেননি। জ্ঞান হারান সরস্বতীদেবী।