পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
বিশ্বের দরবারে আরও একবার দেশ তথা বাংলার ঐতিহ্যকে তুলে ধরার এহেন সুযোগ বানচাল হওয়ায় চরম ক্ষুব্ধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ঈর্ষা ও প্রতিহিংসাপরায়ণতার অভিযোগ তুলে এদিন সন্ধ্যায় ভবানীপুরে নির্বাচনী প্রচারের মঞ্চ থেকে সরব হন তিনি। বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বিদেশ গেলেন, অথচ আমাকে কেন যেতে দেওয়া হল না?’ নিজের মতো করে এ প্রশ্নের জবাবও দিয়েছেন মমতা—‘আমাকে হিংসে করে বলেই আটকানো হল। আমি যেখানেই যেতে চাই, বারণ করা হয়!’
ইতালির রোমের সান্ত’এগিদিও শহরে আগামী ৬-৭ অক্টোবর ‘কমিউনিটি দ্য সান্ত’এগিদিও’ আয়োজন করেছে এই বিশ্ব শান্তি সম্মেলনের। সেখানে বক্তা হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে বক্তা তালিকায় ছিলেন পোপ ফ্রান্সিস, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল, কায়রোর আল আজহারের গ্র্যান্ড ইমাম আহমেদ আল তাইয়ুব এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘির মতো বিশিষ্টরা। আমন্ত্রণ গ্রহণ করে রোম যাওয়ার ব্যাপারে সম্মতিও দিয়েছিলেন মমতা। তার ভিত্তিতে জন্য বিশেষ অনুমতি দিয়েছিল ইতালি সরকার। করোনা প্রতিরোধে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন নিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সেই টিকাকে শুক্রবারই ছাড়পত্র দিয়েছে ইতালি সরকার। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, সফরের সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত হওয়ার মধ্যেই বিদেশ মন্ত্রকের এই আপত্তি অনভিপ্রেত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রতিহিংসার রাজনীতি এটা, দাবি রাজনীতিকদের।
এদিন সকালেই জানা গিয়েছিল, মমতার রোম সফরের অনুমতি দেয়নি কেন্দ্র। বিষয়টি নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সন্ধ্যায় জনতার দরবারে সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হওয়া মাত্রই রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন শুরু হয়ে যায়। তৃণমূল শিবিরের দাবি, প্রধানমন্ত্রী আমেরিকা সফরে গিয়েছেন সরকারি দায়বদ্ধতায়। আর মুখ্যমন্ত্রী ইউরোপে আমন্ত্রিত হয়েছেন নিজের কর্মকুশলতার নিরিখে। ঈর্ষান্বিত পক্ষের নির্দেশেই তাঁর সফর আটকানো হয়েছে। এপ্রসঙ্গে মমতা আরও বলেন, ‘কোভ্যাকসিন নিয়ে কেউ আমেরিকা, ইংল্যান্ড যেতে পারবেন না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভ্যাকসিনকে মান্যতা দেয়নি। কিন্তু বিশেষ অনুমতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী গিয়েছেন। অথচ অনেকেই নিজের কাজে যেতে পারেননি। ইতালি সরকার আমাদেরও বিশেষ অনুমোদন দিয়েছিল। ওই সম্মেলনে পোপ, গ্র্যান্ড ইমাম আর জার্মান চ্যান্সেলরের সঙ্গে ইতালির প্রধানমন্ত্রীও থাকবেন। এত বড় বিশ্ব শান্তি সম্মেলন আগে কখনও হয়নি।’ পরক্ষণেই দৃশ্যত ক্ষুব্ধ মমতার উষ্মা—‘প্রধানমন্ত্রী গিয়েছেন, যেতে দাও। কিন্তু আমাকে কেন প্রতিনিধিত্ব করতে দেওয়া হল না!’ তাঁর মতে, রোমের সম্মেলনে খ্রিস্টান, ইসলাম ধর্মের শীর্ষ প্রতিনিধিরা রয়েছেন। ওখানে গিয়ে তিনি হিন্দুত্বের প্রতিনিধিত্ব করতেন। কিন্তু মুখে তো এত বড় বড় হিন্দুত্বের কথা বলা বিজেপি সরকারই প্রতিহিংসাবশত তাঁকে আটকেছে। তাই গলার স্বর আরও চড়িয়ে মমতার ঘোষণা—‘আমি বিদেশে ঘুরতে যেতাম না। ভারতের প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছিলাম। আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশকে বেইজ্জত করা হল।’