বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
দিন কয়েক আগে প্রায় তিন হাজার কিলোগ্রাম হেরোইন বাজেয়াপ্ত করা হয় গুজরাতের কচ্ছ জেলার মুন্দ্রা বন্দর থেকে। যার বাজারমূল্য ১৫ হাজার কোটি টাকা। এক লপ্তে এত পরিমাণ মাদক এর আগে বিশ্বে কোথাও উদ্ধার হয়নি। ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ইমপোর্ট ফার্মের মালিক এম সুধাকর ও তার স্ত্রী দুর্গা বৈশালিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মুম্বই থেকে আরও তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার মধ্যে দুই আফগান নাগরিক রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে তাদের নাম এখনও প্রকাশ্যে আনা হয়নি।
এই মাদক আফগানিস্তান থেকে ইরানের মাধ্যমে ভারতে পাঠানো হয় বলে জানতে পেরেছে গুজরাত পুলিস। দু’টি কন্টেনার থেকে এই বিপুল পরিমাণ মাদক বাজেয়াপ্ত করে ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই)। প্রথম কন্টেনার থেকে ১৯৯৯.৫৭ কেজি ও দ্বিতীয় কন্টেনার থেকে ৯৮৮.৬৪ কেজি মাদক পাওয়া যায়। দু’টি কন্টেনারে মোট ২৯৮৮.২১ কিলোগ্রাম হেরোইন উদ্ধার হয়। পাউডার তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ওই উল্লেখ করে ওই মাদক আমদানি করা হচ্ছিল। দিল্লিতে পাচারকারীদের কাছে এই মাদক পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। সপ্তাহখানেক আগে একটি জাহাজ থেকে দু’টি কন্টেনারে থাকা পাউডার উদ্ধার করা হয়। ফরেন্সিক পরীক্ষায় জানা যায়, ওই পাউডারের মধ্যে হেরোইনের অস্তিত্ব রয়েছে। তারপরেই তল্লাশিতে জোর দেয় পুলিস ও ডিআরআই। জানা যায়, অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়ায় নথিভুক্ত একটি কোম্পানির নামে পাউডারের আড়ালে মাদকগুলি আনা হচ্ছিল। পাউডার তৈরির ‘ট্যাল্ক স্টোন’ বলে উল্লেখ করা হয়। সেগুলি আফগানিস্তানে প্রক্রিয়াকরণের পর ইরানের বান্দ্রা আব্বাস বন্দর থেকে পাঠানো হয়েছিল। এরপরই অভিযুক্তদের সন্ধানে আমেদাবাদ, দিল্লি, চেন্নাই, গুজরাতের গান্ধীধাম ও মাণ্ডবীতে হানা দেয় পুলিস। তদন্তে উঠে আসে, অন্ধ্রপ্রদেশের মেসার্স আশি ট্রেডিং কোম্পানির নামে ওই পণ্য আসছিল। সংস্থার মালিক হিসেবে এম সুধাকর ও তাঁর স্ত্রী দুর্গা বৈশালির নাম নথিভুক্ত। চেন্নাই থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করেছে ডিআরআই। সোমবার তাদের ভুজে নিয়ে আসা হয়। ভুজ আদালত ধৃতদের ১০ দিন পুলিস হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এই ঘটনায় কয়েকজন আফগান নাগরিক জড়িয়ে আছেন বলেও অভিযোগ। তাঁদের উপর কড়া নজর রাখা হয়েছে।
গুজরাতে মাদক উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি কংগ্রেস। দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে কংগ্রেস নেতা পবন খেরা বিজেপির কাছে জানতে চান,‘কেন গুজরাত মাদক চোরাচালানের হটবেড হয়ে উঠছে?’ ট্যুইটার হ্যান্ডলে কংগ্রেস লিখেছে, দেশে এত বন্দর রয়েছে, অথচ চোরাকারবারীরা বারবার গুজরাতকে বেছে নিচ্ছে। তবে কি গুজরাতকে চোরাকারবারের জন্য নিরাপদ মনে করছে তারা? দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী—দু’জনেই গুজরাতের হওয়া সত্ত্বেও মাদকের কারবার রুখতে তাঁরা কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলেও অভিযোগ কংগ্রেসের। এমনকী এর সঙ্গে আগামী বছর সে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের সম্পর্ক রয়েছে বলেও দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।