গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
লোকসভা নির্বাচনে এখনও দেরি তিন বছর। তাই আগে থেকে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে বোঝাপড়া স্পষ্ট করতে চান তৃণমূলনেত্রী। সেই উদ্দেশ্যেই তাঁর এই ঘনঘন দিল্লি সফরের কৌশল। মোদি জমানায় দেশে দমবন্ধ করা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর। বিরোধী শিবিরগুলিকে একজোট করতে না পারলে তাই শেষ মুহূর্তে আর কিছু করা সম্ভব নয়। এদিন সংসদ ভবন থেকে সামান্য দূরে সাউথ অ্যাভিনিউতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারি ফ্ল্যাটের সামনে দাঁড়িয়ে সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন মমতা। বলেছেন, ‘গণতন্ত্র বিপন্ন। এমত পরিস্থিতিতে আমাদের স্লোগান হল, গণতন্ত্র বাঁচাও, দেশ বাঁচাও। কারণ, দেশই সবার উপরে। আর সেই দেশ যদি স্বাভাবিক ছন্দে না থাকে, তাহলে আর রইল কী?’ তাই তাঁর আহ্বান, ‘গণতন্ত্র বাঁচাতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে এক হতেই হবে। তবেই সুফল মিলবে।’
সেই লক্ষ্যেই এবার দিল্লি এসে কংগ্রেস সুপ্রিমো সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেছেন মমতা। তাঁর কাছে এসেছেন কংগ্রেস নেতা কমল নাথ, আনন্দ শর্মা, অভিষেক মনু সিংভি, ডিএমকে নেত্রী কানিমোঝি, আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আর তারপরেই এদিন সংসদের দুই কক্ষে রণনীতি স্থির করতে বিরোধী দলগুলির দ্বিতীয় বৈঠকে দেখা গেল তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়কে। প্রথম বৈঠকে অবশ্য আমন্ত্রণ না থাকায় তাঁরা যোগ দেননি। এবারের সফরে আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদ যাদবের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছে মমতার। অসমের প্রাক্তন কংগ্রেস এমপি কিরীপ চালিহাও এদিন সকালে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। যদিও অসমে তৃণমূলের শক্তি বাড়াতে তিনি ওই দলে যোগ দিচ্ছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।
অন্যদিকে, উভয়ের ব্যস্ততার কারণে এই পর্বে এনসিপি সুপ্রিমো শারদ পাওয়ারের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখোমুখি বৈঠক হয়নি। তবে টেলিফোনে তাঁদের কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। ফলে দু’জনের বৈঠক না হওয়ায় মোদি বিরোধী জোটের উদ্যোগ নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছিল, তাও তিনি উড়িয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘মহারাষ্ট্রে প্রবল বর্ষণে অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত। তাই শারদ পাওয়ার মুম্বই যাচ্ছেন। আমিও কলকাতায় ফিরছি। কারণ, বর্ষার জেরে ওখানেও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। খুব চিন্তা হচ্ছে।’ প্রশাসক মমতার গলায় শোনা গিয়েছে উদ্বেগের সুর।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এবারের সফর অবশ্য প্রশাসনিক দিকে থেকেও সফল। দিল্লি এসেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন, জিএসটি বকেয়া চেয়েছেন। করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলা নিয়ে আলোচনা করেছেন। সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নীতিন গাদকারির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু, সফর শেষে মোদি জমানায় ‘দেশে যেভাবে বেকারত্ব বাড়ছে, চাষিরা দিনের পর দিন রাস্তায় বসে রয়েছেন, পেট্রল, ডিজেল, রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে’ বলেই আক্রমণ করেছেন মমতা।