গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
তথ্য বলছে, দু’বারই কেন্দ্রের ওই উদ্যোগের কথা কানে আসতেই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ও পরবর্তীকালে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এবার একইভাবে সরব হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। প্রথমবার সেইলের আরএমডি সরানোর বিষয়টি সামনে আসে ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বরে। তখন কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রী তখন ছিলেন ওড়িশার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। আরএমডি সরানোর উদ্যোগের কথা জানার পর জ্যোতি বসু নবীন পট্টনায়েককে এক চিঠিতে লেখেন, সেইলের পরামর্শদাতা সংস্থা তাদের দুর্গাপুর ও বার্নপুর ইস্পাত কারখানায় আকরিক লোহা, কয়লা সহ কাঁচামাল সরবরাহের জন্য কলকাতায় এই শাখার সদর দপ্তর তৈরির সুপারিশ করেছিল। তাসত্ত্বেও কেন এই উদ্যোগ, তা জানতে চেয়েছিলেন জ্যোতিবাবু। সেই চিঠির পর এ নিয়ে আর উচ্চবাচ্য করেনি কেন্দ্র। একই উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০০২ সালেও। তখন কেন্দ্রের ইস্পাতমন্ত্রী ছিলেন ওড়িশার বিজেডি নেতা দিলীপ রথ। সেই কথা জানার পর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সরাসরি প্রতিবাদপত্র পাঠান প্রধানমন্ত্রীকে। তাতে তিনি লিখেছিলেন, এই উদ্যোগ কার্যকর করা হলে রাজ্যের অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। এর সঙ্গে রুটি-রুজির প্রশ্নে যুক্ত বহু মানুষ কর্মহীন হতে পারেন। ওই দুই ইস্পাত কারখানার ভবিষ্যতও প্রশ্নচিহ্নের মধ্যে পড়বে বলে মনে করেছিলেন বুদ্ধদেববাবু। উল্লেখ্য, রাজ্যের বর্তমান অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র ও শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না একই ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
প্রবল শোরগোলের জেরে সেই দু’বারই ওই উদ্যোগ বাস্তবায়িত করতে পারেনি তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, তখন বাজপেয়ি সরকার ক্ষমতায় থাকলেও বিজেপি’র একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল না। কিন্তু এবার নরেন্দ্র মোদি জমানায় বিজেপি’র সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রশ্নাতীত। সরকারের মনোভাবও অনেক বেশি আগ্রাসী। সর্বোপরি, বর্তমান ইস্পাতমন্ত্রী নিজেও বিজেপি’র লোক। রাজ্যের শাসক দল ও একইসঙ্গে রাজ্য সরকার মনে করছে, বিধানসভা ভোটে হেরে বিজেপি রাজ্যকে ভাতে মারার চক্রান্ত করছে। আরএমডি সরানোর উদ্যোগ তারই অঙ্গ। আদতে বিজেপি’র বাংলা বিরোধী মনোভাবই এই উদ্যোগের পিছনে রয়েছে।