বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
এর আগে অসমের রাজ্যপালের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনেওয়াল। শনিবার মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার সর্বানন্দ ও হিমন্তকে দিল্লি ডেকে পাঠিয়েছিল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অসমে সরকার গড়া নিয়ে তাঁদের সঙ্গে চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আলোচনা হয়। তারপরেই হিমন্ত বলেন, রবিবার গুয়াহাটিতে বিজেপির পরিষদীয় দল বৈঠকে বসবে। সেখানেই সরকার গড়া নিয়ে যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে। সেইমতো এদিন হিমন্তকে পরিষদীয় নেতা হিসেবে বেছে নেন বিজেপি বিধায়কেরা। প্রথমে তাঁর নাম প্রস্তাব করেন সর্বানন্দ। তারপর প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নাম বলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি রঞ্জিতকুমার দাস এবং হাফলংয়ের নবনির্বাচিত বিধায়ক নন্দিতা গারলোসা। দ্বিতীয় কোনও নাম না উঠে আসায় সর্বসম্মতিক্রমে বিজেপির পরিষদীয় নেতা নির্বাচিত হন বিজেপির নর্থ ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সের আহ্বায়ক।
পরিষদীয় দলের বৈঠকে নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর একটি ট্যুইট করেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। রবীন্দ্রজয়ন্তীতে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে উদ্ধৃত করে তিনি লেখেন, ‘আমি ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখলাম জীবন আনন্দময়। জেগে উঠে দেখলাম জীবন কর্মমুখর। সেইমতো কাজ করলাম। আর কাজের মধ্যেই আনন্দ।’ এরপর অসমের ভাবী মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘সেই মহামানবকে শ্রদ্ধা, যিনি সর্বদা অনুপ্রাণিত করেন।’ পরে বিকেল নাগাদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আর একটি ট্যুইট করেন হিমন্ত। সেখানে তিনি লেখেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমার উপর আস্থা রাখায় নিজেকে ধন্য মনে করছি। আমার জীবনে এটি স্মরণীয় দিন। আমার প্রতি আপনার এই ভালোবাসার জন্য কৃতজ্ঞ। আপনার দর্শন মেনে অসম সহ গোটা উত্তর-পূর্বকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে আমরা কোনও চেষ্টাই বাদ রাখব না।’
এদিকে, এনডিএ জোটসঙ্গী অসম গণ পরিষদও (অগপ) পরিষদীয় দলের বৈঠক ডেকেছিল। সেখানে তারা বিজেপির পরিষদীয় নেতাকে সমর্থন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি, অগপ এবং অন্য জোট শরিক ইউপিপিএলের সঙ্গে বিজেপি শীঘ্রই বৈঠকে বসবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার। উল্লেখ্য, ছ’বছর আগে কংগ্রেস ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন হিমন্ত।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সর্বানন্দ সোনেওয়ালকে সামনে রেখে ভোটে লড়েছিল বিজেপি। ভোটের আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়ে অসম বিজেপির দায়িত্ব নিয়েছিলেন সোনেওয়াল। জিতে এসে তাঁকেই অসমের মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছিল। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে অসম ও সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতে বিজেপির ভিত শক্ত করেন কংগ্রেস থেকে আসা হিমন্ত। এবার সর্বানন্দ বা হিমন্ত কাউকেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করে বিজেপি ভোটে লড়েনি। হিমন্ত অনকেবারই বলেছেন, কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, তা পরে ঠিক করবে দল। ভোটের পর দেখা যায় বিজেপির সিংহভাগ বিধায়কই হিমন্ত অনুগামী। তাঁরা চাইছিলেন মুখ্যমন্ত্রী হন হিমন্তই। ফলে সেই দাবিকে মান্যতা দিয়েই বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর মুখ বদল করল।