পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
রাতবিরেতে কৃষকদের মধ্যে মুখোশধারী মাথাঢাকা জ্যাকেট গায়ে এক যুবককে ঘুরতে দেখে সন্দেহ হয় কৃষকদের। কৃষকরাই ধরেন সেই যুবককে। কে এই যুবক? কী তার পরিচয়, জানতে চাওয়া হয়। তখনই চাপের মুখে গড়গড় করে সবকিছু ফাঁস করে দেয় সে। জানায় তার নাম যোগেশ। তার কথায়, ‘চাষিদের বাধা দিতে দু’জন মহিলা সহ ১০ জনের একটি দল তৈরি করা হয়েছিল। অর্ধেককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল পুলিসের পোশাক পরে কিষান প্যারেডে হামলা চালানোর। এমনভাবে হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল যাতে মনে হয়, মিছিলে অংশ নেওয়া কৃষকরাই পুলিসকে লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে। অন্য দলের হাতে চারজন কৃষক নেতার ছবি তুলে দেওয়া হয়েছিল। ধর্না মঞ্চেই সেই চারজনকে গুলি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল দলের বাকি সদস্যদের।’ সংবাদমাধ্যমের সামনে ওই ‘মুখোশধারী’ অভিযোগের আঙুল তুলেছে পুলিসের দিকেই।
এই ঘটনা জানাজানি হতেই শনিবার সকাল থেকে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। হুঙ্কার দিয়ে আন্দোলনকারীরা বলেছেন, ‘চাষিদের ক্ষোভ দমন করতে না পেরে গুন্ডা পাঠাচ্ছে পুলিস। সীমানায় এক ফোঁটা রক্তও যদি ঝরে, তাহলে দিল্লিতে আগুন জ্বলবে। সরকার যেন সেই অভিঘাতের কথা মাথায় রাখে।’ ঘটনার পরেই দিল্লি সীমানায় নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়।
তবে যোগেশ ভোল পাল্টাতে দেরি করেনি। শুক্রবার রাতেই তাকে ধরে নিয়ে যায় হরিয়ানা পুলিস। আর শনিবার সকালে সোনিপত থানায় ওই যুবক দাবি করে, ‘বিক্ষোভরত কৃষকদের একটি অংশ তাকে আটকে রেখে মারধর করেছে। হুমকি দিয়েছে। এমনকী কীভাবে পুলিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে হবে, তার স্ক্রিপ্টও লিখে দিয়েছে।’ হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর বলেছেন, ‘তদন্ত চলছে। তবে সাধারণতন্ত্র দিবসের কথা মাথায় রেখে কড়া নিরাপত্তা রয়েছে সর্বত্র।’
তবে এরই মধ্যে কৃষকদের দাবির কাছে ক্রমশ মাথা নত করছে সরকার। আইন প্রত্যাহারের দাবি এখনও মানা হয়নি ঠিকই, কিন্তু প্রাথমিকভাবে বছর দেড়েক তা কার্যকর না করার কথাও সরকার বলেছে। পাশাপাশি সাধারণতন্ত্র দিবসে কিষান প্যারেড নিয়ে যে টালবাহানা চলছিল, তাও মিটে গিয়েছে। কিষান গণতন্ত্র প্যারেড নিয়ে দু’পক্ষের স্নায়ুর লড়াইয়ে শেষমেশ জয় হয়েছে বিক্ষোভরত কৃষকদেরই।
এদিনই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আওতাধীন
দিল্লি পুলিস ট্রাক্টর-প্যারেডের অনুমতি দিয়ে দিয়েছে। শনিবার কৃষক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘২৬ জানুয়ারি দিল্লির রাস্তাতেই ট্রাক্টর-প্যারেড হবে। দিল্লি পুলিস অনুমতি দিয়েছে। ওইদিন পুলিসি ব্যারিকেড সরিয়ে নেওয়া হবে। শান্তিপূর্ণভাবে ট্রাক্টর নিয়ে সীমানা এলাকাগুলি থেকে দিল্লিতে প্রবেশ করবেন কৃষকরা।’ কৃষকরা অবশ্য আইন প্রত্যাহারের দাবি থেকে সরছেন না। বলছেন, ‘আইন বাতিল করতে চাইলে তবেই ফের সরকারের সঙ্গে কথা হবে।’ যদিও পুলিস জানিয়েছে, কোন পথে ট্রাক্টর র্যালি হবে, তা নিয়ে কৃষকরা লিখিতভাবে কিছুই জানায়নি।