রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
ডিসেম্বর থেকে করোনার ভ্যাকসিন সরকারের হাতে আসার সম্ভাবনা প্রবল। একবার তা চলে এলে রাজ্যে রাজ্যে সরকারি ও বেসরকারিভাবে সংরক্ষণ পরিকাঠামো তৈরি রাখতে হবে। কোটি কোটি ডোজ মজুত, সরবরাহ এবং পরিবহণ ব্যবস্থাকে এককথায় বলা হচ্ছে ‘ভ্যাকসিন হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট’। আর এই প্রক্রিয়ায় শুধু স্বাস্থ্যসম্মতভাবে টিকার নিখুঁত রক্ষণাবেক্ষণই নয়, তার সুরক্ষা নিয়েও যথেষ্ট উদ্বিগ্ন কেন্দ্র। তাই পুরো সংরক্ষণ ব্যবস্থাকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। যাতে ভ্যাকসিন স্টোরেজে হামলা চালিয়ে জঙ্গিরা দেশজুড়ে টিকাকরণ ব্যবস্থাকে ব্যাহত না করতে পারে। সেটা সুনিশ্চিত করতেই কঠোর প্রহরায় মুড়ে দেওয়া হবে স্টোরেজ ও সরবরাহ কেন্দ্র। ঠিক যেভাবে দেশের পরমাণু অথবা মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্রকে ঘিরে অতন্দ্র প্রহরায় থাকে কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী। সেরকমই নিশ্ছিদ্র সুরক্ষাবলয়ে ভ্যাকসিন স্টোরেজকেও রাখতে চাইছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
এমনিতেই পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলি অবিরত ভারতে আঘাত হানার পরিকল্পনা করছে বলে গোয়েন্দা রিপোর্টে প্রকাশ। তার উপর আশঙ্কা করা হচ্ছে, করোনার টিকাকরণ প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করার চক্রান্তেও লিপ্ত হতে পারে সন্ত্রাসবাদীরা। আমেরিকা, রাশিয়া, ফ্রান্স সহ একাধিক দেশে ভ্যাকসিনের সংরক্ষণ ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ সুরক্ষা বলয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রেরও সেকথা অজানা নয়। সেই মতো ভারতে কেন্দ্রীয়ভাবে এবং রাজ্যে রাজ্যে গড়ে তোলা স্টোরেজ ব্যবস্থায় থাকবে পুলিস ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নজরদারি। ‘ভ্যাকসিন হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্টে’ যুক্ত থাকা ব্যক্তিদেরও বিশেষ যাচাই পর্বের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। এমন সতর্কতার কারণ, ভারতে থাকা স্লিপার সেলকে কাজে লাগিয়ে জঙ্গি সংগঠনগুলি ভ্যাকসিনের স্টোরেজে কোনও অন্তর্ঘাত না ঘটাতে পারে। প্রকৃত ভ্যাকসিন চুরি করে সেই জায়গায় নকল ও জাল প্রতিষেধক স্টোরেজে ঢুকিয়ে দিতে পারে তারা। এই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখেই বিশেষ সুরক্ষা কাঠামো তৈরি করা হবে। সেক্ষেত্রে স্থান নির্বাচনের উপর বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ, যে কোনও স্থানেই ভ্যাকসিন স্টোরেজ করা হবে না। এড়িয়ে যাওয়া হবে জনবহুল এলাকাকে। সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার থাকবে না, এমন কোনও জায়গায় নিরাপত্তার বজ্রআঁটুনিতে রাখা হবে টিকা।
কোভিডের প্রতিষেধক তৈরির প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে নেই ভারতও। বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিনের তৃতীয় দফার ট্রায়াল সম্পূর্ণ হওয়ার পর আপৎকালীন ব্যবহারের জন্য ছাড়পত্র চাওয়া হবে। এদেশে করোনা প্রতিরোধে অক্সফোর্ড, ভারত বায়োটেক, ক্যাডিলার পাশাপাশি রাশিয়ার স্পুটনিক ভি টিকা আসতে চলেছে। সম্ভবত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যেই এই ভ্যাকসিনগুলি চলে আসবে বলে খবর। বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারও শুরু হয়ে যেতে পারে। শুরুতেই কেন্দ্রীয় সরকার ভ্যাকসিন সংগ্রহ করবে। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রথম পর্যায়ের সংগ্রহপর্ব শেষ হওয়ার পর তা আসবে বাজারে। অর্থাৎ, সাধারণ মানুষ তখন সরাসরি বাজার থেকে টিকা কিনতে পারবে। এই গোটা প্রক্রিয়ায় তিন রকম সংরক্ষণ ব্যবস্থা রাখা হবে। প্রাথমিকভাবে ভ্যাকসিন নির্মাতা সংস্থার নিজস্ব স্টোরেজ থাকছেই। তারপর থাকবে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের সংরক্ষণ ব্যবস্থা। প্রতিটি স্তরেই ভ্যাকসিন যাতে নিরাপদ ও সুরক্ষিত থাকে, সেটা নিশ্চিত করতে চায় কেন্দ্র।