উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে মধ্যম ফল আশা করা যায়। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে নতুনত্ব আছে। কর্মরতদের ... বিশদ
ঘটনা ২। মে মাসের ঘটনা। চেন্নাইয়ের শঙ্কর নেত্রালয়ের এক বিভাগীয় অধিকর্তা লক্ষ করলেন, হঠাৎই বহু রোগী লাল চোখ বা কনজাংটিভাইটিসের সমস্যা নিয়ে আসছেন। খটকা লেগেছিল তাঁর।
বয়স বছরও পেরয়নি। এরই মধ্যে তামাম বিশ্বকে নিজের বহুরূপী চরিত্র নিয়ে খাবি খাওয়াচ্ছে করোনা। এখনও পর্যন্ত এই রোগ ও রোগীদের সম্পর্কিত বিভিন্ন সমীক্ষা ও গবেষণাপত্র খতিয়ে দেখে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পাঁচটি-দশটি নয়, এখনও পর্যন্ত কমবেশি ৪০ ধরনের উপসর্গের সন্ধান মিলেছে করোনার! পাবমেড, কোক্রেন লাইব্রেরি-সহ বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য তথ্যভাণ্ডারের মেটা অ্যানালিসিস বা নিবিড় সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, এর মধ্যে জ্বর, গা-হাত-পা ব্যথা, সর্দি-কাশি থাকছে প্রায় অর্ধেক কোভিড রোগীর। স্বাদ গন্ধ চলে যাওয়া, হাঁচি, চোখের পিছনে ব্যথা, ক্লান্তিবোধ, হার্টের নির্দিষ্ট ধরনের ছন্দপতন (ট্র্যাকিকার্ডিয়া) সহ বেশকিছু লক্ষণ দেখা যাচ্ছে পাঁচ থেকে ৪৯ শতাংশ রোগীর মধ্যে। কনজাংটিভাইটিস, টনসিলে প্রদাহ-সহ চার-পাঁচটি বিরল লক্ষণ দেখা যাচ্ছে পাঁচ শতাংশেরও কম রোগীর।
দেশ-বিদেশের গবেষকরা এখনও পর্যন্ত সন্ধান পাওয়ার করোনার বিভিন্ন উপসর্গগুলিকে চারভাগে ভাগ করেছেন। সিস্টেমিক, শ্বাসজনিত, অন্ত্রসংক্রান্ত ও হৃদযন্ত্রঘটিত। এগুলির মধ্যে বিশ্রাম নিলেও শ্বাসকষ্ট, খিদে সম্পূর্ণ চলে যাওয়া, কিছু ঠাহর করতে না-পারা, বুকে ব্যথা ও চাপ অনুভব করা এবং ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি জ্বর থাকলে সেগুলিকে ‘রেড ফ্ল্যাগ’ বা দুশ্চিন্তার কারণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এগুলি কোভিড নিউমোনিয়ার সম্ভাব্য লক্ষণ হতে পারে।
করোনার এই ৪০টি উপসর্গ কী কী? মেটা অ্যানালিসিস করে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এগুলি হল, ১. কাশি ২. থুতু আসা ৩. শ্বাসকষ্ট ৪. অক্সিজেনের অভাব ৫. পজিটিভ আসকুলেশন ফাইন্ডিং (স্টেথো দিয়ে পর্যবেক্ষণের সময় অস্বাভাবিকতা ধরা পড়া) ৬. শ্বাসজনিত নানা অসুবিধা ৭. কফের সঙ্গে রক্ত ৮. নাসিকাঘটিত উপসর্গ ৯. গলা ব্যথা ১০. স্বাদ ও গন্ধের অনুভূতি চলে যাওয়া ১১. কাঁপুনি ১২. ঠান্ডা লাগা ১৩. জ্বর ১৪. তাপমাত্রা অস্বাভাবিক কমা ১৫. মাংসপেশির ব্যথা ১৬. ক্লান্তিবোধ ১৭. দুর্বলতা ১৮. মাথা ব্যথা ১৯. গা গোলানো ২০. ডায়ারিয়া ২১. তলপেটে ব্যথা ২২. অন্ত্রের সমস্যা ২৩. কম রক্তচাপ ২৪. বেশি রক্তচাপ ২৫. বুক ধড়ফড়ানি ২৬. হৃদযন্ত্রের নির্দিষ্ট ধরনের ছন্দপতন (ট্র্যাকিকার্ডিয়া) ২৭. বুকে চাপ চাপ ভাব বা ব্যথা ২৮. নাক থেকে কাঁচা জল পড়া ২৯. নাক বন্ধ হওয়া ৩০. খিদে চলে যাওয়া ৩১. কনজাংটিভাইটিস ৩২. কিছু বুঝতে না পারা ৩৩. টনসিলে প্রদাহ ৩৪. ধুম জ্বরের সঙ্গে কাঁপুনি ৩৫. র্যাশ ৩৬. বুক থেকে সাঁই সাঁই আওয়াজ ৩৭. কোমরে ব্যথা ৩৮. মাথা ঘোরানো ৩৯. লিম্ফ নোডে প্রদাহ এবং ৪০. চোখের পিছনে ব্যথা।
রাজ্যের করোনা মোকাবিলার বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য ডাঃ সৌমিত্র ঘোষ বলেন, নাক, মুখ ও চোখ দিয়ে শরীরে ঢুকে করোনা দেহের নিজস্ব ব্যবস্থাগুলিকে হাইজ্যাক করে ও নিজের মতো চালিত করার চেষ্টা করে। যে যে অঙ্গে সে প্রবেশ করে, সেখানে সেখানেই উপসর্গ দেখা যায়। অন্যান্য ভাইরাল অসুখের সঙ্গে ফারাক হল, ‘কোভিড ১৯’ প্রায় সমস্ত অঙ্গে প্রভাব ফেলতে পারে।