কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
করোনাকালে ভারতের ভোটচিত্র পাল্টে যাচ্ছে। টিএন শেষনের নির্বাচনী সংস্কারের শুরু ছিল বিহারে। ঘটনাচক্রে সেই রাজ্যই এখন কোভিড প্রোটোকল মেনে ভোট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নয়া ‘মডেল’। তাই রাজনীতির পাশাপাশি গুরুত্ব পাচ্ছে বিধি-নিষেধও। শুক্রবার কমিশন জানিয়েছে একঝাঁক নতুন নিয়ম। বুথের সংখ্যা বাড়ছে, গ্লাভস পরে বোতাম টিপতে হবে ভোটযন্ত্রে, কোয়ারেন্টাইনে থাকা ভোটারদের পৃথক ভোটদান ব্যবস্থা। আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু হয়েছে বাংলাতেও। তাই বিহার কেমন ভোট করে, তার পরিদর্শনে পড়শি রাজ্যে যাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরের বিশেষ দল। এরই মধ্যে অবশ্য হতে পারে ফালাকাটা, ফলতা, কৃষ্ণনগর (উত্তর), হেমতাবাদ এবং এগরা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। আগামী মঙ্গলবার দিল্লিতে কমিশনের কর্তারা বৈঠকে বসবেন। সেখানে এই পাঁচ কেন্দ্রের ভোট নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে।
তবে উপনির্বাচনের থেকেও নরেন্দ্র মোদির মাথাব্যথার কারণ বিহার। জাতীয় স্তরে প্রতিদ্বন্দ্বীহীন হিসেবে বিবেচিত হলেও বিগত কয়েক বছরে রাজ্যে রাজ্যে মোদির জয়ের গ্রাফ ক্রমেই নিম্নমুখী। সবথেকে উদ্বেগজনক হল, ছয় রাজ্যে প্রবল শক্তিক্ষয় হয়েছে বিজেপির। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার সৌজন্যে কংগ্রেস ভাঙিয়ে কিছুটা ড্যামেজ কন্ট্রোল হয়েছে মধ্যপ্রদেশে। কিন্তু সরাসরি ভোটে জয়ী না হওয়ার উদ্বেগ পিছু ছাড়েনি। উপনির্বাচনে না জিতলে মধ্যপ্রদেশে বিজেপি সরকার ফের সঙ্কটে পড়বে।
তাই এই মুহূর্তে মোদির কাছে বিহার-বিজয় সবথেকে বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ। করোনা সঙ্কট, লকডাউন, অর্থনীতির মন্দা, বিধ্বস্ত কর্মসংস্থান এবং সাম্প্রতিক কৃষি আইনের সংশোধন—এই একঝাঁক ইস্যুর সম্মিলিত প্রচারের ভরকেন্দ্র হতে চলেছে বিহারের ভোট। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার হলেও এই ভোটে এনডিএর জয়-পরাজয়ের ব্যর্থতা-সাফল্যের দায় অথবা কৃতিত্ব হতে চলেছে একান্তই মোদির। সুতরাং বিহারেও যদি বিজেপির জোট ধাক্কা খায়, তাহলে বিরোধীরা ছেড়ে কথা বলবে না। প্রচার করবে করোনা থেকে কৃষি আইন—সব ইস্যুতে মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে মোদিকে।
বিহারে ২০০৫ সাল থেকে কখনও বিজেপির সঙ্গে, আবার কখনও লালুপ্রসাদ যাদবের দলের সঙ্গে জোট সরকার চালাচ্ছেন নীতীশ কুমার। তিনি বারংবার জোট বদল করে সুকৌশলে ১৫ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রীর পদে রয়ে গিয়েছেন। এবার বিজেপি জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হয়ে ফের ভোটের ময়দানে। কিন্তু তাঁর দলের একক ভোটব্যাঙ্ক কখনওই সরকার গড়তে যথেষ্ট নয়। অন্যদিকে, এই বিধানসভা ভোটে আসরে নেই লালুপ্রসাদ। তিনি পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলার দোষী সাব্যস্ত হয়ে রাঁচির এক গেস্টহাউসে ‘জেলবন্দি’। তাঁর মুসলিম-যাদব ভোটব্যাঙ্কের রাজপাট সামলাচ্ছেন দুই পুত্র তেজস্বী ও তেজপ্রতাপ যাদব। কিন্তু লালুহীন রাষ্ট্রীয় জনতা দলের অবস্থা অনেটাই দিশাহীন। যা বিজেপি জোটের কাছে কিছুটা হলেও অ্যাডভান্টেজ। কিন্তু ভোট-কৌশল? মহামারীর মধ্যে কিন্তু পাল্টে যাবে প্রচারের ধরনও। সেটাও নরেন্দ্র মোদির কাছে অন্যতম দুশ্চিন্তা। কারণ, এই প্রথম ভিড়ে ঠাসা সভা সমাবেশে হাই ভোল্টেজ ভাষণে ভোটারের মন জয় করার সুযোগ পাবেন না তিনি। সঙ্গে অতিরিক্ত সঙ্কট—তাঁর ও দলের প্রধান ভোট ম্যানেজারই অসুস্থ। অমিত শাহ! অর্থাৎ বিজেপির বিহার ক্যাম্পেনের রণাঙ্গণে সেনাপতি এবার একা মোদি!