নয়াদিল্লি: করোনা আবহে স্কুল চালুর ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কিন্তু পঠনপাঠন শুরু হলে পড়ুয়াদের সংক্রমণের সম্ভাবনা যে যথেষ্ট, তা পরোক্ষে বুঝিয়ে দিল কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ক্যাগ)-এর রিপোর্ট। সেন্ট্রাল পাবলিক সেক্টর এন্টারপ্রাইজ (সিপিএসই) জানিয়েছিল, মোদি জমানায় দেশজুড়ে সরকারি স্কুলগুলিতে প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার শৌচালয় তৈরি করা হয়েছে। বুধবার সংসদে সেই দাবি নাকচ করে ক্যাগ জানাল, এর মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ টয়লেট এখনও অকেজো। সেগুলি হয় নির্মাণ করা হয়নি, নয়তো অর্ধেক তৈরি করে ফেলে রাখা হয়েছে। ব্যবহারের যোগ্য একেবারেই নয়। ৭২ শতাংশ শৌচালয়ে ঠিকঠাক জলের পরিষেবা নেই। ৭৫ শতাংশ স্কুলে দিনে একবারও ঠিকমতো তা পরিষ্কার করা হয় না। এই রিপোর্টের জেরে বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়ল কেন্দ্রের ‘স্বচ্ছ বিদ্যালয় অভিযান’ প্রকল্প। শিক্ষার অধিকার আইন বলছে, সব সরকারি স্কুলে ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য পৃথক শৌচালয় থাকতে হবে। সেই মোতাবেক ২০১৪ সালে উদ্যোগী হয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। ‘স্বচ্ছ বিদ্যালয় অভিযান’ প্রকল্পে দায়িত্ব দেওয়া হয় সিপিএসইকে। তাদের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধে তেল ও জ্বালানি প্রস্তুতকারক একাধিক সংস্থা।
সম্প্রতি এই প্রকল্প পর্যালোচনা করেছে ক্যাগ। প্রায় ১৫টি রাজ্যের ২ হাজার ৬৯৫টি স্কুলে সমীক্ষা চালানো হয়। তাতেই দেখা যায়, ৮৩টি শৌচালয় নির্মাণের বানানোর কাজ শুরু করেনি সিপিএসই। ৮৬টি টয়লেট কিছুটা তৈরির পর বন্ধ রাখা হয়েছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, ২০০টি শৌচালয়ের অস্তিত্ব রয়ছে শুধু খাতায়-কলমে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ৬৯১টি বিদ্যালয়ের টয়লেটের ন্যূনতম রক্ষণাবেক্ষণও হয় না। পরিচ্ছন্ন তো নয়ই। কোনওটা বাইরে থেকে আটকানো। তো কোথাও হাত ধোওয়ার সুবিধা পর্যন্ত নেই। ১০৯৭টি টয়লেট মাসে একবার পরিষ্কার করা হয় মাত্র।
কো-এড স্কুলগুলির ক্ষেত্রেও একই ছবি ধরা পড়েছে। ক্যাগের দাবি, এমন ১ হাজার ৯৬৭টি স্কুলের মধ্যে ৯৯টির শৌচালয় ব্যবস্থা পুরোপুরি অকেজো। শুধু তাই নয়, এর মধ্যে ৪৩৬টি বিদ্যালয়ে একটিমাত্র টয়লেট কাজ করে। অর্থাৎ, হিসেব অনুযায়ী প্রায় ২৭ শতাংশ স্কুলেই পৃথক শৌচালয়ের সুবিধা নেই।