বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
শিক্ষানীতি ঘোষণার পর থেকেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে। দক্ষিণ ভারত এবং পশ্চিমবঙ্গ ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে কেন্দ্রের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছে। প্রস্তাব আকারে থাকা শিক্ষানীতি ঘোষণা মাত্র বাধা আসায় বস্তুতই ব্যাকফুটে কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেও এর পক্ষে সওয়াল করেছেন। আর এদিন বর্তমানকে নিশাঙ্ক বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী, শিক্ষা রাজ্যেরও বিষয়। তাই রাজ্যের সঙ্গে লাগাতার আলোচনার পরই নতুন নীতি কার্যকর হবে। তবে এটা জাতীয় শিক্ষানীতি। তাই মানব না—এমনটা কোনও রাজ্যই বলতে পারে না। তবে অবশ্যই কিছু চাপিয়ে দেওয়া হবে না। যৌথ আলোচনা, পরামর্শ মতোই নয়া শিক্ষানীতি কার্যকর হবে।’
কবে থেকে এবং কীভাবে এই নয়া শিক্ষানীতি কার্যকর হবে? কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, ‘সবটাই হবে ধাপে ধাপে। রাজ্যকে এড়িয়ে বা অন্ধকার রেখে কিছুই করা হবে না। এ ব্যাপারে রাজ্যের শিক্ষাদপ্তর, শিক্ষা বোর্ড, কেন্দ্র-রাজ্য শিক্ষামন্ত্রীদের কমিটি, এনসিইআরটি, এসসিইআরটি, এনটিএর পাশাপাশি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়েই নতুন শিক্ষানীতি কার্যকর হবে।’ তিনি বলেন, ‘২০২৫ সালের মধ্যে তিন থেকে ছ’বছরের শিশুদের সম্পূর্ণ শিক্ষার টার্গেট নেওয়া হয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি এবং প্রাক-স্কুল ব্যবস্থায় তাদের পড়াশোনা করানো হবে। নয়া নীতিতে বলা হয়েছে, আট বছর পর্যন্ত পড়াশোনা হবে খেলাচ্ছলে। দেখা হবে, শিশুমনের উপর যাতে চাপ না পড়ে। এনসিইআরটি এ ব্যাপারে পাঠ্যক্রমও তৈরি করছে।’
সবার জন্য শিক্ষা বা সর্বত্র প্রি-স্কুল চালুর ধারণায় অবশ্য কোনও বিরোধিতা এখনও পর্যন্ত আসেনি। প্রশ্ন উঠেছে পরিকাঠামো নির্মাণ এবং খরচ নিয়ে। বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে ভাষা শিক্ষা। বিশেষ করে ‘হিন্দি’। সরাসরি হিন্দি বা সংস্কৃত বাধ্যতামূলক করার কথা না বলা হলেও অভিযোগ উঠছে, সুযোগ বুঝে বিজেপি-আরএসএসের ‘হিন্দু-হিন্দি-হিন্দুস্থান’ এজেন্ডা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্র। যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তা সরাসরি অস্বীকার করেছেন। বলেছেন, ‘ত্রিভাষা সূত্র বরং আরও বেশি করে মাতৃভাষা, আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষার সুযোগ দেবে। ছোটরা যে ভাষায় বাড়িতে কথা বলে, সেই ভাষায় স্কুলেও পড়বে। এর থেকে ভালো আর কী হতে পারে? ঘরের ভাষায় পড়লেই না ছোটরা চটজলদি শিখতে পারবে!’
তবে নিশাঙ্ক জানান, ‘আঞ্চলিক ভাষার পাশাপাশি ক্লাস সিক্স থেকে বিজ্ঞান এবং অঙ্কের মতো বিষয় কিন্তু ইংরেজিতেও পড়ানো হবে। যাতে ক্লাস নাইনে উঠে ছাত্রছাত্রীরা দু’টি ভাষাতেই স্বচ্ছল হতে পারে। এর জন্য সব ভাষাতেই উচ্চমানের টেক্সবুক এবং পড়াশোনার সামগ্রী তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’ দেশের ২৫টি অঞ্চলে ১ হাজার ২৪০টি কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় রয়েছে। সরকার চাইছে, শিক্ষানীতি কার্যকরে সেগুলিতে অগ্রাধিকার দিতে। তবে আসল লক্ষ্য অবশ্যই রাজ্যগুলির সহযোগিতা। যা না পেলে এই শিক্ষানীতি প্রস্তাব-বন্দিই থেকে যেতে পারে।