বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
সল্টলেক, ইএম বাইপাস, ধর্মতলা, চাঁদনি চক, পার্ক স্ট্রিট, শ্যামবাজার, বালিগঞ্জ, গড়িয়ার একাধিক রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাঁরা খেতে আসবেন, তাঁদের মাস্ক থাকা বাধ্যতামূলক। ঢোকার সময় সবারই থার্মাল গান দিয়ে তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হবে। দেওয়া হবে স্যানিটাইজার। প্রতি টেবিলের মধ্যে দূরত্ব থাকবে কমপক্ষে ছ’ফুট। প্রত্যেক টেবিলে থাকবে স্যানিটাইজার পাউচ অথবা বোতল। পার্ক স্ট্রিটের এক রেস্তরাঁর কর্ণধার জানান, ওয়েটার, রাঁধুনি এবং কর্মচারীরা মাস্ক, গ্লাভস, হেড ক্যাপ পরেই কাজ করবেন। একাধিক রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কাস্টমার চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ওই টেবিল স্যানিটাইজ করা হবে। আর পুরো রেস্তরাঁয় দিনে দু’বার জীবাণুনাশক স্প্রে হবে। বালিগঞ্জের এক নামী রেস্তরাঁ আবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জুতোর কভার দেওয়া হবে, তা পরেই ঢুকতে হবে।
ওয়েটার, কর্মচারীদের সঙ্গে কাস্টমারদের দূরত্ব বজায় রাখতেও নেওয়া হচ্ছে একাধিক পদক্ষেপ। শহরের এক চাইনিজ রেস্তরাঁর কর্ণধার জানান, টেবিলে ফোন নম্বর দেওয়া থাকবে। কল করে খাবারের অর্ডার দেবেন খাদ্যরসিকরা। আবার মেনু চার্ট স্ক্যান করে খাবার অর্ডার নেওয়ার ব্যবস্থা চালু করছে সল্টলেকের একটি রেস্তরাঁ। কয়েকটি রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাবতীয় অর্ডার যাতে একবারেই দেওয়া হয়, সেই আবেদন জানানো হবে। সেক্ষেত্রে ওয়েটার একলপ্তে সব খাবার পৌঁছে দেবে টেবিলে। চিনার পার্কের একটি রেস্তরাঁ জানিয়েছে, প্রতিটি টেবিলেই শুরুতে গরম জলের পাত্র দেওয়া হবে। এমনকী বেসিনেও মিলবে গরম জল। কেউ বাথরুম ব্যবহারের পর সঙ্গে সঙ্গে সেটি স্যানিটাইজেশন করা হবে। সিংহভাগ রেস্তরাঁই ডিজিটাল পেমেন্টের উপর জোর দিচ্ছে।
কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, একজনের ব্যবহার করা চামচ ধোয়া হলেও কী করে অন্যজন তা ব্যবহার করবেন? তাতে তো লালারস থেকে যেতে পারে। সেই ভাবনা থেকেই প্লেট-চামচ পুনর্ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শহরে একাধিক আউটলেট থাকা একটি নামী চাইনিজ রেস্তরাঁ। পার্ক সার্কাসের এক অভিজাত রেস্তরাঁর ম্যানেজার জানিয়েছেন, আগামী এক মাস একবার ব্যবহারযোগ্য বা ডিসপোজেবল চামচ-প্লেট দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ডেকার্স লেনের সুপ্রসিদ্ধ এক দোকানও সেই পথে হাঁটার ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে।
হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, অনেক রেস্তরাঁ বাঁশের চামচ দেবে বলে ঠিক করেছে। আবার কেউ কেউ চামচ-প্লেট গরম জলে ফোটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, সংগঠিত ও অসংগঠিত মিলিয়ে রাজ্যে প্রায় ৫৫ হাজার রেস্তরাঁ রয়েছে। কলকাতায় সেই সংখ্যা ৩৫ হাজার।
এত সবের পরেও মালিকদের চিন্তা কাস্টমার নিয়ে। আতঙ্ক কাটিয়ে তাঁরা আসবেন তো! তাই আপাতত খাবারের দাম না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। ছোট ও মাঝারি মাপের কয়েকটি রেস্তরাঁ এখনও জল মাপছে, পরিস্থিতি আরেকটু থিতু হলেই আসরে নামবে তারা।