কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
কোভিড সংক্রমণের নিরিখে ভারত এখন সপ্তম স্থানে। প্রতিটি রাজ্যেই হু হু করে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। রোগীর ভিড় সামলাতে উদয়াস্ত লড়াই করে চলেছেন চিকিৎসক, নার্স থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মীরা। দিল্লির বাবু জগজীবনরাম হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসক ভি কে ভার্মার কথায়, ‘সত্যিই খুব কঠিন সময় চলছে। এমন একটা সময়ের মুখোমুখি হতে হবে ভাবতেই পারিনি। নিজের বাড়িতেও ভয়ে ভয়ে থাকি।’ মানসিক এই অস্থিরতাকে বশে আনতে ভার্মার সকাল শুরু হয় প্রাণায়াম ও যোগ দিয়ে। তারপর হাসপাতাল মুখো হন তিনি।
দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালের নার্স ডলি ম্যাসি। অসম্ভব কাজের চাপে বিধ্বস্ত তিনি। প্রতি মুহূর্তে তাঁকে তাড়া করছে মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়ার ভীতি। ম্যাসি বলছেন, ‘কাজের চাপটা সামলানো যায়। কিন্তু সংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কাতেই মানসিক শক্তি হারিয়ে ফেলছি।’ সেই শক্তি পুনরুদ্ধারে বাইবেল পড়তে শুরু করেছেন ম্যাসি। সারাক্ষণই তাঁর কাছে রয়েছে একটি পকেট বাইবেল। কাজের ফাঁকে একটু অবসর পেলেই পবিত্র এই ধর্মগ্রন্থে চোখ বুলিয়ে নেন তিনি। ম্যাসির কথায়, ‘প্রভুই আমাকে শারীরিক ও মানসিক শক্তি জোগাতে সাহায্য করে।’
কোভিডের সঙ্গে লড়তে গিয়ে দিল্লিতে এখন পর্যন্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০। এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছে চিকিৎসক মহল। দিল্লির এলএনজেপি হাসপাতালের চিকিৎসক কুমুদ ভারতী বলছিলেন, ‘কোভিডের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ করতে হচ্ছে আমাদের। ফলে সংক্রামিত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।’ ক’দিন আগে এই হাসপাতালেরই অপারেশন বিভাগের টেকনিক্যাল সুপারভাইজার কোভিডে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। পরে তিনি মারাও যান। তাঁর এই মৃত্যুতে আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সরা। দিল্লির আর একটি বেসরকারি হাসপাতালের ডিরেক্টর বিকাশ মৌর্যের কথায়, ‘কোভিড রোগীর চিকিৎসা আর পাঁচটা রোগীর মতো নয়। চূড়ান্ত সতর্কতা না নিলেই বিপত্তি। ফলে, একজন চিকিৎসক কিংবা নার্সকে টানা ছ’ঘণ্টা পিপিই পরে থাকতে হয়। এই সময়ে দেহের তাপমাত্রা বহুগুণ বেড়ে যায়। সে এক অসহনীয় অবস্থা। তার উপর টেনশন তো রয়েইছে।’ মানসিক এই চাপ কাটাতে বাড়িতে অবসর সময়কে বেছে নিয়েছেন মৌর্য। তিনি বলছিলেন, ‘কর্তব্যরত অবস্থায় একটুও সময় পাই না। বাড়িতে এসে প্রিয় শিল্পীর গান কিংবা জনপ্রিয় টিভি শো দেখি। কখনও ভালো বইয়ে মুখ গুঁজে থাকি। পরের দিন আবারও নতুন উদ্যোমে কোভিড-যুদ্ধে নেমে পড়ি।’