নয়াদিল্লি, ৩১ মে: লকডাউন শেষ। শুরু হচ্ছে আনলক ১। ঠিক তার আগের দিনই ফের সব রেকর্ড ভেঙে দিল নতুন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য বলছে গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের শিকার হয়েছেন ৮ হাজার ৩৮০ জন। এই প্রথম দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৮ হাজার পার করল। রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশে মোট লক্ষ ৮২ হাজার ১৪৩ জন। শুধু মহারাষ্ট্রেই আক্রান্ত ৬৫ হাজার ১৫৮ জন মানুষ। দেশে মৃতের সংখ্যাও ৫ হাজারের গণ্ডি পেরল। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১৯৩ জনের। যা গতকালের থেকে কম। এই নিয়ে সারা দেশে মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ১৬৪। যার মধ্যে মহারাষ্ট্রে মারা গিয়েছেন ২ হাজার ১৯৭ জন। তবে এই হিসেব সকালের। রাতের মধ্যে আক্রান্ত বাড়ায় সংক্রমণের নিরিখে জার্মানিকেও ছাপিয়ে বিশ্বতালিকায় অষ্টম স্থানে উঠে এল ভারত। রাজ্য সরকারগুলির পক্ষ থেকে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে একথা জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটার। আক্রান্ত বৃদ্ধির এই হার অব্যাহত থাকলে একদিনের মধ্যে ফ্রান্সকেও টপকে যেতে পারে ভারত।
গতকাল একদিনে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়েছিল। যদিও পরে জানা যায়, অনেক জায়গাতেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা মানুষের নাম নথিভুক্ত ছিল না। সেগুলি একত্রিত হতেই সংখ্যা বাড়ে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৬১৪ জন। সুস্থতার হার ৪৭.৭৬ শতাংশ। আরও আশার কথা শুনিয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। তাদের সমীক্ষা বলছে, ভারতে প্রতি ১০ লাখ জনসংখ্যায় মাত্র ৩৩.২ জন আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। অন্যান্য দেশের থেকে যা অনেকটাই কম। তাদের রিপোর্ট আরও বলছে, এপ্রিল মাস অবধি যত সংক্রমণ ধরা পড়েছে তাদের মধ্যে ২৮.১ শতাংশের উপসর্গ ছিল না।
দেশের মোট সংক্রামিতের ৩৫.৭৮ শতাংশ এবং মৃতের ৪২.৫৪ শতাংশই ঘটেছে মহারাষ্ট্রে। এরই মধ্যে মুম্বইতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল ছবি ধরা পড়েছে। শনিবার রাতে যোগেশ্বরী হাসপাতালের আইসিইউতে দেড় ঘণ্টার মধ্যে সাতজনের মৃত্যু হয়। অভিযোগ, সেখানে প্রয়োজনীয় মাত্রায় অক্সিজেন ছিল না। জানা গিয়েছে, সেদিন রাতে কোনও বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ছিলেন না। রোগীদের শ্বাসকষ্টে ছটফট করতে দেখে ১০ তলায় কর্তব্যরত সিনিয়র ডাক্তারের কাছে ছুটে যান নার্সরা। তিনি এসে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক করার আগেই সাতজনের মৃত্যু হয়।
তামিলনাড়ুতে এদিন সকাল পর্যন্ত সংক্রমণের শিকার ২১ হাজার ১৮৪। মারা গিয়েছেন ১৬০ জন। রাজধানী দিল্লিতে সকাল পর্যন্ত আক্রান্ত ছিল ১৮ হাজার ৫৪৯। বিকেলে রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্যে অবশ্য সংখ্যাটা ১৯ হাজার ৮৪৪-এ গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এই নিয়ে টানা চারদিনে রাজধানীতে আক্রান্ত বেড়েছে হাজারের বেশি। মৃতের সংখ্যাও সকালে ছিল ৪১৬, বিকেলে তা হয়েছে ৪৭৩। গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লি পুলিসের দু’জন এএসআই করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। এর মধ্যে একজনের দু’বার কোভিজ টেস্ট নেগেটিভ এসেছিল। ধীরে ধীরে করোনা মুক্ত থাকা রাজ্যগুলিতে থাবা বসাচ্ছে সংক্রমণ।