সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি, ২১ মে: উম-পুন সুপার সাইক্লোনের জেরে বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গকে মহাবিপর্যয় থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সবরকম সহায়তা করবে কেন্দ্রীয় সরকার। আজ একথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানালেও, রাজ্যের জন্য কোনও অন্তর্বর্তী আর্থিক প্যাকেজ রাত পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়নি। সাধারণত এই ধরণের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতির হিসেব পর্যালোচনা করে কেন্দ্র একটি পূর্ণাঙ্গ আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করে থাকে। কিন্তু তার আগে প্রাথমিকভাবে দ্রুত ত্রাণকার্য শুরু করে দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী একটি প্যাকেজও দেওয়া হয় রাজ্যকে।
আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলকে পশ্চিমবঙ্গে পাঠানো হচ্ছে। ওই টিম সামগ্রিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পর্যালোচনা করবে। তারপর ফিরে এসে কেন্দ্রকে বিস্তারিত রিপোর্ট দেবে। কেন্দ্রীয় টিম পশ্চিমবঙ্গ থেকে ফিরে দিল্লিতে যে রিপোর্ট দেবে, তার নিরিখেই চূড়ান্ত হবে ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ। কিন্তু বিধ্বংসী সাইক্লোনের ক্ষয়ক্ষতি দেখেও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোনও উচ্চবাচ্যই করা হচ্ছে না বলে এদিন প্রথমটায় তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয় পশ্চিমবঙ্গবাসীর মধ্যে। অবশেষে দুপুরের পর প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাসবার্তার পাশাপাশি সকালেই মোদি সরকারের ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গউবা পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার মুখ্যসচিবদের সঙ্গে বিপর্যয় নিয়ে আলোচনা করেন। ক্যাবিনেট সচিব আজ নির্দেশ দিয়েছেন ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে সর্বদা যোগাযোগ রাখতে এবং চাহিদা অনুযায়ী সবরকম সহায়তা দিতে। ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের প্রধান এস এন প্রধান আজ বলেছেন, আরও চারটি টিমকে দ্রুত পশ্চিমবঙ্গে পাঠানো হচ্ছে।
এরই মধ্যে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, আদৌ আগামী ২৫ মে থেকে কলকাতা এয়ারপোর্টে অভ্যন্তরীণ বিমান পরিবহণ চালু করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে। কারণ কলকাতা বিমানবন্দরের রানওয়ে, টারম্যাক, হ্যাঙ্গার, এয়ারলাইন্স অফিস সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আজ এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া ও ডিরেক্টর জেনারেল অফ সিভিল এভিয়েশনের সঙ্গে বৈঠক করেছে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক। কলকাতা থেকে বিমান চালানো আদৌ কতটা সম্ভব সেটা আগামী দু’দিন ধরে পরীক্ষা করা হবে। একইভাবে যাচাই করা হচ্ছে রেললাইনের পরিস্থিতিও।