পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
আগামী শনিবার ১১ এপ্রিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করবেন মোদি। যদিও ওই বৈঠকের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি বলেই বুধবার বিকেলে নবান্নে মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সর্বদল বৈঠকে লকডাউন বাড়ানোর ইঙ্গিত প্রসঙ্গেও তাঁর প্রশ্ন, রাজ্যের সঙ্গে কথা না বলেই প্রধানমন্ত্রী কী করে লকডাউন বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছেন?
যদিও ভয়াবহ ভাইরাস করোনার সংক্রমণ রুখতে সর্বদল বৈঠকে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা এদিন লকডাউন বাড়ানো অথবা ধাপে ধাপে তোলার মতো যাবতীয় সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীর উপরই ছেড়েছেন। দেশের কথা ভেবে প্রধানমন্ত্রী যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তাতেই সায় রয়েছে বলেই বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ। বৈঠকে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলির ৮০ শতাংশ সদস্যই লকডাউন বাড়ানোর পক্ষে সায় দিয়েছেন। উল্লেখ্য, করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় গত ২৫ মার্চ থেকে টানা ২১ দিন দেশব্যাপী লকডাউন চলছে।
এদিকে, আগামী ১৪ এপ্রিল লকডাউন পর্ব শেষ হলেও দিল্লির লাগোয়া গাজিয়াবাদ, গৌতম বুদ্ধনগর সহ বারাণসী, লখনউ, মিরাটের মতো ১৫টি জেলায় লকডাউন বজায় থাকবে বলেই এদিন জানিয়ে দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার। বিজেপি শাসিত এই রাজ্যের সিদ্ধান্ত আগামীদিনে গোটা দেশের লকডাউন সম্পর্কে একটি ইঙ্গিত বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এদিনের বৈঠকে কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীও অংশ নেন। বৈঠকের পর তিনি বলেন, যে হারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, মৃত্যুর হারও ক্রমবর্ধমান, সেই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর কথায় একপ্রকার স্পষ্ট যে এক লহমায় ১৫ এপ্রিল থেকে গোটা দেশে লকডাউন উঠছে না।
করোনা মোকাবিলার এই সময়কে ‘সামাজিক জরুরি অবস্থা’র তকমা দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। করোনার মতো মহামারীর মোকাবিলায় রাজ্যগুলির প্রভূত প্রশংসা করে সর্বদলীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সকলের নিরলস প্রচেষ্টাতেই সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসব। বিশ্বযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করে মোদি বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে এবং পরে যেভাবে পৃথিবী বদলে গিয়েছে, করোনার ক্ষেত্রেও তা হবে। রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধির সঙ্গে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার সঙ্গে লড়তে উন্নত দেশও হিমশিম খাচ্ছে। তার মধ্যেই ভারত এখনও পর্যন্ত সংক্রমণ অনেকটাই রুখতে সক্ষম হয়েছে। জনতা জনার্দনের সম্পূর্ণ সহযোগিতাতেই তা সম্ভব হয়েছে। করোনার কবল থেকে মানুষের জীবন রক্ষাই সরকারের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সংক্রমণ রুখতে ভবিষ্যতেও কড়া সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার উপর জোর দিতে হবে। লকডাউন থেকে বেরনোর রাস্তা খুঁজতে হবে। আর্থিক অবস্থা থেকেও উত্তরণের রাস্তা বের করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন মোদি।
তৃণমূলের পক্ষে বৈঠকে অংশ নিয়ে দলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, করোনা মোকাবিলার এই সময়ে রাজ্যের হাতে পর্যাপ্ত অর্থ নেই। তারই মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লড়াই করে যাচ্ছেন। তাই অবিলম্বে রাজ্যের পাওনা ৬১ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হোক। মকুব করা হোক রাজ্যের বকেয়া ঋণ। একইসঙ্গে তিনি বলেন, লকডাউনের জেরে যেভাবে পরিযায়ী শ্রমিকরা এক রাজ্য থেকে অন্যত্র চলে গিয়েছে, তা খুবই চিন্তাজনক। তাদের কর্ম নিরাপত্তার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে নিশ্চিত করার আবেদন জানিয়ে সুদীপবাবু বলেছেন, মোদিজি দেখবেন, যাতে কোনও শ্রমিকের চাকরি না যায়। ছবি: পিটিআই