বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
দিল্লিতে তবলিগ-ই-জামাতের অনুষ্ঠানে এরাজ্য থেকেও বহু মানুষ যোগ দেন। এখনও পর্যন্ত ৭৩ জন সেখানে গিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু এই সংখ্যাটা আরও বেশি বলে সন্দেহ করছেন প্রশাসনের কর্তারা। ধারণা করা হচ্ছে, অনেকেই রাজ্যে ফিরে গোপন জায়গায় লুকিয়ে রয়েছেন। যে কারণে তাঁদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু, তাদের খুঁজে বের করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ দিল্লিতে ওই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে যে সংক্রমণ গোটা দেশে ছড়িয়েছে, তা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়ে দিয়েছে। সেই কারণেই উদ্বেগ বাড়ছে এ রাজ্যের পুলিস-প্রশাসনের আধিকারিকদের মধ্যে। নিজামুদ্দিন থেকে ফেরা ব্যক্তিদের মাধ্যমে জেলায় জেলায় গোষ্ঠী সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। সিদ্ধান্ত হয় দক্ষ তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে এই বিষয়ে খোঁজখবর করানো হবে। এরপরই সিআইডিকে এই সংক্রান্ত কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে রাজ্য পুলিস সূত্রে জানা যাচ্ছে। তাদের দায়িত্ব কী হবে? এক গোয়েন্দা আধিকারিকের কথায়, সিআইডির কাজ হবে জেলায় জেলায় ঘুরে এই সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা। সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকে দিল্লিতে ওই সভায় অংশ নিতে কে বা কারা গিয়েছিলেন এবং তাঁরা ফিরেছেন কি না, আর ফিরলেও কোথায় রয়েছেন, তা জানার চেষ্টা করা। ফিরে আসার পরও যাঁরা কোয়ারেন্টাইনে না গিয়ে লুকিয়ে রয়েছেন বা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে খবর মিলবে, তাঁদের তুলে এনে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে। সিআইডির যেহেতু প্রত্যেক জেলাতেই ইউনিট রয়েছে, তাই তাদের পক্ষে এই কাজটি ভালো করে করা সম্ভব। এই ইউনিটগুলির কাজকর্ম সার্ভিল্যান্স করবেন ডিএসপিরা। একজন ডিএসপিকে দুটি ডিডিআই ইউনিটের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ইতিমধ্যেই জেলা ঘুরে অফিসাররা খোঁজখবরও শুরু করে দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট জেলায় তবলিগ-ই-জামাতের সঙ্গে কারা জড়িত, এই তথ্য প্রথমে নেওয়া হচ্ছে। তারপর দেখা হচ্ছে, তাদের মধ্যে কারা কারা দিল্লিতে ওই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান। গোয়েন্দাদের হাতে আসা তথ্য অনুযায়ী, বিপুল সংখ্যক মানুষ এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান এরাজ্য থেকে। প্রাথমিকভাবে এই সংখ্যাটা থেকে ২১০০-র কাছাকাছি বলে জানা যাচ্ছে। যার মধ্যে প্রায় ১৩০০ জন রাজ্যে ফিরে এসেছেন বলে খবর। এখনও একটা বড় অংশ দিল্লিতে রয়ে গিয়েছেন। প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে ফেরার খবর আসছে, তাই সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
গোয়েন্দা আধিকারিকদের বক্তব্য, যাঁরা এই অনুষ্ঠানে যান তাঁদের অনেকেই অন্যের নামে তোলা সিম ব্যবহার করছেন অনেকদিন ধরে। তাই খোঁজ করতে এলাকায় গিয়ে দেখা যাচ্ছে, যে ব্যক্তির নামে সিম, তিনি দিল্লিতেই যাননি। এমনকী তবলিগ জামাতের সঙ্গে তাঁর দূর-দূরান্তের কোনও সম্পর্কই নেই। তাই গা-ঢাকা দিয়ে থাকা ব্যক্তিদের খুঁজতে একটু অসুবিধা হচ্ছে।
অফিসারদের নজরে এসেছে, নিজামুদ্দিন কাণ্ড নিয়ে হইচই হওয়ার পর রাজ্য থেকে যাওয়া ব্যক্তিদের বেশিরভাগই ফিরে এসে পুরনো সিম বদলে নতুন সিম ব্যবহার করছেন। তাই তাঁদের হদিশ পেতে একটু সময় লাগছে। তবে পুলিসের দাবি, বেশিদিন তাঁদের পক্ষে লুকিয়ে থাকা অসম্ভব। বেশ কিছু এলাকায় তাই নজরদারি চালানো হচ্ছে। কিন্তু, ততক্ষণে গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিতে পারছেন না গোয়েন্দা কর্তারা।