কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
দিল্লির নিজামুদ্দিনের ওই ধর্মীয় সমাবেশে অংশগ্রহণকারী এবং তাঁদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের অনেককেই দেশের বিভিন্ন রাজ্যে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত তবলিগির ওই সমাবেশ এবং অংশগ্রহণকারীদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ২২ হাজার মানুষকে পৃথক করে রাখা হয়েছে। নিজামুদ্দিন থেকে দেশের ১৭টি রাজ্যে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে। এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের যুগ্মসচিব পুণ্যসলিলা শ্রীবাস্তব সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘রাজ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয় রেখে ওই সভায় যোগদানকারী এবং তাঁদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের খুঁজতে জোরকদমে অভিযান চলছে।’ সেকাজে বিপর্যয় মোকাবিলা এবং কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিস বাহিনী দিনরাত কাজ করছে।
এদিকে, নিজামুদ্দিন ফেরত ২২ জনকে গত মঙ্গল ও বুধবার উত্তরপ্রদেশের কানপুরের লাল লাজপত রায় হাসপাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ছ’জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। চিকিৎসাধীন এই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেই স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। তাঁরা হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করতে করতে থুতু ছেটাচ্ছেন। এমনকী চিকিৎসকদের দিকেও থুতু ফেলছেন। এ প্রসঙ্গে এক চিকিৎসক বলেন, ‘ ওই রোগীরা নিজেদের হাতে থুতু ফেলে সেই হাত সিঁড়ির হাতল, দেওয়াল ইত্যাদি জায়গায় মাখাচ্ছেন। ডাক্তারদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন। ওঁদের বোঝানোর চেষ্টা চলছে।’ যদিও, নিজামুদ্দিন ফেরতদের দুর্ব্যবহারের বিষয়টি পুলিসকে জানানোর পরেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
শুধু কানপুর নয়, অসমের গোলাঘাট জেলার এক হাসপাতালেও ওই সভা ফেরত ভর্তি রোগীদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এবং তা হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার হাসপাতাল পরিদর্শনের সময়ই। নিজামুদ্দিন ফেরত আট কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংস্পর্শে এসেছিলেন ৪২ জন। গোলাঘাটের একটি হাসপাতালে তাঁদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, শুক্রবার তাঁদের অনেকেই হাসপাতালজুড়ে থুতু ছিটিয়ে বেড়ান। এমনকী, স্বাস্থ্যকর্মীদের গায়েও তাঁরা থুতু ছেটানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। এই দায়িত্বজ্ঞানহীন কাণ্ডকারখানা সামাল দিতে হাসপাতালকর্মীদের বিল্ডিংয়ের বাইরের পাইপ বেয়ে উঠে কোয়ারেন্টাইন ওয়ার্ডের জানালা বন্ধ করতে হয়।
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পর মন্ত্রী বলেন, ‘কোয়ারেন্টাইনে থাকা অনেকেই মনে করছেন, তাঁরা সুস্থ রয়েছেন। আমরা তাঁদের জোর করে আটকে রেখে দিয়েছি। সেজন্যই সর্বত্র থুতু ফেলে বেড়াচ্ছেন। পরিবারের উচিত তাঁদের ফোন করে বিষয়টি বোঝানো। কারণ, যত্রতত্র থুতু ফেললে করোনা সংক্রমণ সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।’
অন্যদিকে, উত্তরপ্রদেশের শামলিতে তিনজনের রিপোর্ট পজিটিভ। তাঁর মধ্যে দু’জন বাংলাদেশি। তৃতীয়জন অসমের বাসিন্দা। তাঁদের ঝিনঝানার সরকারি হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। দিল্লির ওই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাওয়া দুই আক্রান্ত সহ বাংলাদেশের ১২ জন সদস্যের বিরুদ্ধে শামলিতে এফআইআর দায়ের হয়েছে। ফরেনার্স অ্যাক্টে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
এছাড়া, ছত্তিশগড়ের ১০৭ জন সদস্য নিজামুদ্দিন থেকে রাজ্যে ফিরেছিলেন। তাঁদের ২৮ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল বলেছেন, ৫০ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল। তার মধ্যে ২৮টি নেগেটিভ। অপরদিকে, নিজামুদ্দিন ফেরত রাজস্থানে ১০ জনের আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে।